ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার ঃ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্সের অবহেলায় সাড়ে ৩ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর শিকার শিশু বুরহান মিয়া মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নস্থিত মশাজান গ্রামের মক্তছির মিয়া ও মনোয়ারা বেগমের পুত্র।
অভিযোগে প্রকাশ- নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু বুরহান মিয়াকে গত ২০ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গতকাল ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে, মক্তছির মিয়া কর্তব্যরত নার্স শাহিদা বেগমকে বারবার অনুরোধ ও হাতেপায়ে ধরে শিশুটিকে দেখতে বললেও, তিনি তাতে সাড়া না দিয়ে মোবাইল ফোনালাপে মত্ত থাকেন। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনালাপের পর তিনি একটি ইনজেকশন কিনে আনার জন্য মক্তছির মিয়ার হাতে স্লিপ ধরিয়ে দেন। ইনজেকশন কিনে নিয়ে আসার পর শিশুটিকে নেবুলাইজেশন প্রয়োগ করা হয়। নেবুলাইজেশন প্রয়োগ করার পর শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে অক্সিজেন দেয়া হলেও শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিষ্টার ডাঃ শহিদুল ইসলাম খাঁন এসে শিশুটিকে মৃতঃ ঘোষনা করেন। শিশু বুরহানের স্বজনরা বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার মরদেহ নিয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় গেলে মৌলভীবাজার মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিষ্টার ডাঃ শহিদুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের শিশু বিভাগের কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স রীতা রাণী দেবী জানান- সিবিআর নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের খাবার খাওয়ানোর বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু, তারা শিশুটিকে দুধ পান করিয়েছেন। যার ফলে, পানকৃত দুধ খাদ্যনালীর বাইরে চলে যাওয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, শিশুটির অবস্থার অবনতির বিষয়টি অভিভাবকরা আমাদেরকে জানাতে দেরী করেছেন। তারপরও আমরা শিশুটিকে আম্বু দিয়েছি। কিন্তু, তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি সুহেল আহমদ জানান- পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। শিশু বুরহানের গার্ডিয়ানরা যদি আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান, তাহলে লাশের ময়নাতদন্ত করাতে হবে। কিন্তু, তারা ময়নাতদন্ত করাবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তারা অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন