কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
রাজারহাট প্রেসক্লাব ও এর সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে অপপ্রচারের ক্ষমা প্রার্থনা করে থানায় মুচলেকা দিয়েছেন প্রেসক্লাবের বহিস্কৃত দুই সদস্য।
রাজারহাট থানা অফিসার ইনচার্জের কার্যালয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়াদী বাপ্পী ও রাজারহাট প্রেসক্লাব সভাপতি সরকার অরুণ যদুর উপস্থিতিতে তারা মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
জানা গেছে,প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র বিরোধী একাধিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরার অভিযোগ ও এর সত্যতা পাওয়ায় গত ৮মার্চ রাজারহাট প্রেসক্লাবের সদস্য ইব্রাহিম আলম সবুজ ও আব্দুল হাকিম সবুজকে বহিস্কার করা হয়। একারণে উক্ত ব্যক্তি দ্বয় গত ১৩/০৩/২০২১ইং তারিখ থেকে ১০/০৪/২০২১ইং তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় রাজারহাট প্রেসক্লাব ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক (দৈনিক সমকাল ও জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিনিধি) আসাদুজ্জামান আসাদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহারে আক্রমনাত্তক ও ভীতি প্রদর্শন মূলক,কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা-বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার করেন। এর অন্যতম হচ্ছে আসাদ এখন জেলহাজতে,চাঁদাবাজী নিয়ে হৈচৈ,প্রেসক্লাবের
সরকারি বরাদ্দের টাকা আতœসাত ইত্যাদি। যা ছিল পুরোপুরী তথ্য বিকৃত ও মিথ্যা-কাল্পনিক। এছাড়া মিথ্যা বিভ্রান্তিবর খবরগুলো ফেসবুকে
আপলোড,শেয়ার,আপত্তিকর লাইক,কমেন্ট করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ধারা ও উপধারা তিন অনুযায়ী কঠোর অপরাধ।
প্রকৃত পক্ষে বিগত ২০০৪ইং সনের ৪ জানুয়ারী থেকে ২৬মার্চ পর্যন্ত তৎকালিন রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজের প্রয়াত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে স্থানীয় দৈনিক কুড়িগ্রাম খবরে ১৫টি সিরিজ রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল। শুরু থেকে মাসাধিককাল ও নয়টি রিপোর্ট প্রকাশের পর ওই কলেজের প্রয়াত সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ এর বিরুদ্ধে আদালতে ছিনতাই ও চাঁদাবাজীর মামলা করেছিলেন। সে সময় তিনি জামিন না হওয়ায় ৫দিন জেল হাজতে ছিলেন। আসলে সংবাদ প্রকাশ ও সাংবাদিকতার কারনে মামলা ও জেল হাজতে থাকা এটা ছিল তার জন্য গর্বের বিষয়। পরবর্তী সময়ে স্বাক্ষ্য প্রমাণে মামলাটি আদালত কর্তৃক মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছিলেন। এটি আদালত কর্তৃক একটি মিমাংসিত বিষয়।
এছাড়া প্রেসক্লাবে টিআর প্রকল্পের টাকা আতœসাতের খবরটি সঠিক ছিল না। প্রেসক্লাবে শুধুমাত্র ৪৫হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ থাকলেও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগীয়তায় এবং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তার ব্যক্তিগত অর্থ সহ দেড় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে প্রেসক্লাব কার্যালয়ের পূনঃসংস্কার কাজকরেছেন।
এঘটনায় রাজারহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ গত ১৩এপ্রিল রাজারহাট থানায় অপ-প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এরপ্রেক্ষিতে উক্ত ব্যক্তিদ্বয় তাদের ভূল বুঝতে পেরে ফেসবুক আইডি থেকে ওই বিভ্রান্তিকর তথ্য ডিলিট করেন। পরে রাজারহাট থানার আপোস বৈঠকে তারা অন্যের প্ররোচনায় ভূল করে এসব অসত্য তথ্য ফেসবুকে প্রচারের দাবী করে ভবিষ্যতে পূনঃরাবৃত্তি ঘটবে না মর্মে অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন। এছাড়া তাদের এই সমস্ত লেখা নিজের বা অন্যের ফেসবুক আইডি থেকে ডিলিট করে দেয়ার শর্তে মুচলেকা প্রদান করেন।
এসময় রাজারহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী, রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু সরকার, রাজারহাট প্রেসক্লাব সভাপতি সরকার অরুণ যদু, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, আওয়ামীলীগ নেতা বাদশা মিয়া, উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক কুমোদ রঞ্জন সরকার, যুগ্ন আহবায়ক ছামিউল ইসলাম, রাজারহাট প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিষয়টি অঙ্গীকার নামার শর্ত সাপেক্ষে আপোস মিমাংসা করা হয়।
রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু সরকার এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।