রাজিবপুর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে আ’লীগ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজদ্দৌলা (৪৮) এর বিরুদ্ধে ভিখারী অন্ধ মায়ের কিশোরী সন্তানকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অসহায় কিশোরী ঐ নেতার বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করত বেশ কয়েক বছর যাবৎ। পাড়া প্রতিবেশীর কানাগোসায় মেয়েটির গর্ভবতী হওয়ার খবর ফাঁস হয়ে যায়। ধর্ষিতা মেয়েটি ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা।

গত শুক্রবার নির্যাতিত কিশোরী প্রতিবেশীদের তোপের মুখে ঘটনার সত্বতা এলাকাবাসীদের জানায়। ঐ রাতে এলাকার মাতাব্বর অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম মাষ্টার, মাদ্রাসা শিক্ষক আশরাফ ক্বারী, দলীল লেখক নুরনবীসহ বেশ কয়েক জনের সামনে লম্পট সিরাজদ্দৌলার কুকীর্তি তুলে ধরে। রাত্রি ১২টায় মাতাব্বররা মেয়েটিকে তার বড় ভাই শাহার আলীর হেফাজতে রেখে সকালে সুরাহা করার সিদ্ধান্ত নেয়। মাতাব্বররা চলে গেলে সিরাজদ্দৌলা তার আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে ধর্ষিতা ও তার অন্ধ মাকে নানা ধরণের ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে মাখনের চর নামক স্থানে জিম্মি করে রাখে এবং মাতাব্বরদের ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন পায়তারা করে ধর্ষক সিরাজদ্দৌলা।

দীর্ঘ ৪০ ঘন্টা পর ৩১ মে এলাকাবাসী মেয়েটি ও তার মাকে উদ্ধার করে। রাত ৮টায় ধর্ষিতা রাজিবপুর থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। মামলা নং-০১, তারিখ-০১/০৬/২০২০ইং।

অভিযোগে জানা গেছে, রাজিবপুর উপজেলার বড়াইডাঙ্গী কলেজ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা অভিযুক্ত সিরাজদ্দৌলা। প্রতিবেশী ভীক্ষুক অন্ধ মায়ের বাবা হারা ১৮ বছর বয়সী মেয়েটি অভাবের তাড়নায় অভিযুক্ত সদর ইউনিয়নের আ’লীগের সাবেক সভাপতির বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করত। দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে ঐ নেতা বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে দিনের পর দিন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে আসছিল। এক পর্যায়ে মেয়েটির পেটে সন্তান আসলে ঘটণা ফাঁস হয়। ইতোপূর্বে মেয়েটির গর্ভপাতের চেষ্টাও করেছিল সিরাজদ্দৌলা। এ সব ঘটণা ধামাচাপা দিতে মা ও মেয়েটিকে তুলে নিয়ে জিম্মি করে।

একই গ্রামের শিক্ষক নুরুল ইসলাম, আশরাফ ক্বারীসহ আরও কয়েকজন জানান, আমাদেরসহ অসহায় মেয়েটিকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় ধর্ষিতার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। আইনের আওতায় নিয়ে সিরাজদ্দৌলার উচিৎ বিচার হওয়া দরকার।

ধর্ষিতা অভিযোগ করে বলে, “তার বাড়িত কাম কইরা খাই, ঘর পরিস্কার, কাপড় পরিস্কার থিক্কা শুরু কইরা সব কাম করছি। প্রথমদিন জোড় কইরা মুখ চাপাইয়া ধইরা ইজ্জত নিছে। পরে বাড়িতে মানুষজন না থাকলে সুযোগ পাইলেই বিছানায় নিয়া গেছে। কইছে বিয়া করমু। আর এইডা যেন আমি কাউকে না কই, তাও কইয়া দিছে।”

অভিযোক অস্বীকার করে ধর্ষক সিরাজদ্দৌলা বলেন, “আমার প্রতিবেশীরা জমিজমার বিরোধের কারণে এবং আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার খুন্ন করার জন্য মিথ্যে অভিযোগ করেছে। রাজনৈতিক দলের গ্রুপিংয়ের কারণে একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে।
বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।”

রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোর্শেদ তালুকদার অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, “ধর্ষণ মামলার প্রস্তুতি চলছে। মেয়েটির শরীরিক গঠন দেখেই বোঝা যায় গর্ভবতী।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *