নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুরের সেকচিলান সরঃ প্রাথঃ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মান কাজে ব্যবপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিডি)’র তত্বাবধানে নির্মিত এই ভবনের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং সিডিউল মোতাবেক না হওয়ায় চলমান কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। এই ভবন নির্মানে কাজ করছে পাবনার বালিয়া হালোট এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স প্রগতি এন্টারপ্রাইজ’। চারতলা ফাউন্ডেশন এর উপরে একতলা সম্পন্ন করা হবে ভবনটি। যার নির্মান ব্যয় বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে ৯২ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় নির্মান কাজ শুরু হয় গত ২৪/০৮/২০২০ তারিখে কিন্তু কাজের শুরুতেই নিম্নমারে সামগ্রী এবং অনিয়মের কারণে কাজ বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। পরবর্তীতে এলাকাবাসী এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে ভালো কাজের প্রতিস্রুতি দিয়ে পূনরায় কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
চলমান কাজ দেখতে গিয়ে গতকাল শনিবার (৯ জানুয়ারী) খুবই নিম্নমানের কাজের কারণে পূনরায় বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- মূল ফাউন্ডেশন এর উপরে ড্রপ ঢালাই হয়েছে নামমাত্র। বিভিন্ন যায়গায় রড বের হয়ে আছে এবং চর্তুদিকে অসমতল। শুধু তাইনয় ৪/৫দিন পূর্বের গাথুনী সামান্য ধাক্কাতেই ধসে যাচ্ছে। বালির মধ্যে খুব সামন্য সিমেন্ট এর মিশ্রণের কারণে হাতের চাপেই তা ঝরে যাচ্ছে।
এলকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে মো: মাজেদুল ইসলাম, ডালিম সরকার, আলাল মেম্বরসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- নির্মান কাজের শুরু থেকেই নিম্ন মানের সমাগ্রী এবং অনিয়মের কারণে আমরা কাজ বন্ধ রাখতে বলি পরবর্তী তারা আবারও অনিয়ম শুরু করে। ড্রপ ঢালাইয়ে খুবই লাজুক অবস্থার কাজ করে তা মাটি দিয়ে দ্রুত ঢেকে দেওয়ার সময় আমরা এলাকাবাসীর সহযোগীতায় তা হাতেনাতে ধরে ফেলি এবং কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা উম্মে আর (রুমা) জানান- আমি চাই, বাচ্চাদের নিরাপত্বা এবং ভবিষ্যতের জন্য সঠিক নিয়ম এবং সিডিউল অনুযায়ী কাজ হোক।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: বাবর আলী মাষ্টার বলেন- নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করি । আবার পূনরায় অনিয়ম কালে আমরা হাতে নাতে ধরে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি, এবং তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন- আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি এবং এলাকাবাসীর গণ স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছি।
এবিষয়ে প্রগতী এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী মো: সাইফুল ইসলাম বলেন- ‘আমার পক্ষ থেকে এই কাজের বিষয়ে কোন পিছুটান নেই, আমি বারবার ঐ এলাকার প্রতিনিধিসহ বিদ্যালয় সভাপতিকে অবগত করেছি যে, আপনাদের প্রতিষ্ঠান, আপনারা কাজ বুঝে নিবেন, আমার কড়া নির্দেশ আছে তার পরেও যদি মিস্ত্রী কাজ খারাপ করে বা আপনাদের খারাপ লাগে তবে অবশ্যই ভেঙ্গে দিয়ে তা পূনরায় করা হবে। এবিষয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। আমি চাইনা নিম্নমানের কাজের জন্য আমার প্রতিষ্ঠান বা আমার মান ক্ষুন্ন হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী বলেন- এই ঠিকাদার ভালো কাজ করে, উনার কাজ খারপ হওয়ার কথা না, তারপরেও আমরা দেখে তারপর জানাতে পারবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানিন দ্যুতি জানান- আমাকে এলাকাবাসী এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বিষয়টি অবগত করেছে, আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দিয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *