রাজীবপুর(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি

একটানা ১৭ মাস বা প্রায় ৫৪৪ দিন বন্ধ থাকার পর রবিবার(১২ সেপ্টেম্ব) খুলছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।করোনা মহামারীর সংক্রমন যাতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পরতে না পারে সেজন্য প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ করা হয়েছিলো সরকারী সিন্ধান্তে।

দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপাকে পরেছিলো উপজেলার বিভিন্ন,লাইব্রেরী স্টেশনারি, টেইলার্স, কম্পিউটার কম্পোজ সহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ বিক্রেতারা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ থাকায় বিক্রিতে ভাটা পড়েছিলো এসব ব্যবসায়ীদের। জীবন ও জীবকায় পরেছিলো এর প্রভাব।দীর্ঘ বন্ধ থাকার পর সরকারী সিন্ধান্তে আজ রবিবার উপজেলার সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় শুরু হয়েছে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান।একারণে খুশি রাজীবপুর উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আজ উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই স্কুলে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা। অভিবাঁধন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ছিল উচ্ছ্বাস। স্কুল গুলোতে ছিল উৎসবের আমেজ।

রাজীবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটে স্টেশনারী ব্যবসা করেন জাহাঙ্গীর নামের এক তরুণ,তার সাথে কথা বলে জানা গেছে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা দোকানে এসেছে কেউ নতুন কলম কেউবা খাতা পেন্সিল ক্রয় করেছে।করোনার কারনে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় তার ভালো ব্যবসা হয়নি। স্কুল খোলায় তিনি দারুণ খুশি।ফারুক আহমেদ নামের আরেক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তিনি জানান,স্কুল বন্ধ থাকায় চকলেট, চিপস,আইসক্রিম জাতীয় খাদ্য পণ্য গুলো কম বিক্রি হতো।স্কুল খোলায় আজকে তার বিক্রি বেড়েছে।

হৃদয় টেইলার্স এর স্বতাধীকারী মজিবর রহমান বলেন,এমনিতেই এখন তৈরি পোশাক মানুষ খুব কম ব্যবহার করে। স্কুল, কলেজ,মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ড্রেস তৈরি করা যায় নি।আজ প্রতিষ্ঠান গুলো চালু হওয়াতে অনেকই পোশাক তৈরি করতে আসছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

স্কুল খোলার প্রথম দিনেই রাজীবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করছে প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা।

রাজীবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব আজিম উদ্দিন বলেন, মাস্ক পরিধান করে শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে ক্লাস করেছে। সামাজিক দূরত্বে আসন গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ সংকট আছে।এসমস্য সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

কোদালকাটি ইউনিয়নের সাদাকাত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন,যথাসম্ভব স্বাস্থ্য বিধি মেনে ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে এসেছে আমরা ক্লাসও নিয়েছি।

চর সাজাই দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, শারীরিক দূরত্ব মেনে এবং মাস্ক পরিধান করে আমাদের মাদ্রাসায় ক্লাস হয়েছে।

রাজীবপুর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো ব্যাপক। সকাল থেকেই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে। কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো বিদ্যালয় প্রাঙ্গন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হওয়ার উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা।এসময় শারীরিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারে শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত দের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত ছিলো সন্তোষজনক।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রাখা হয় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর বেশ কয়েকবার সম্ভাব্য তারিখ জানানো হলেও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ ছিলো।তবে অনলাইন ক্লাস এবং এসাইনমেন্ট এর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু ছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন