ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার :: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল স্টুডেন্ট সোসাইটি নানা কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল শ্যীমঙ্গল পৌর শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, বক্তব্য-কুইজ প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায়, শ্রীমঙ্গল শহরতলীর মুসলিমবাগ গ্লোরিয়াস কোচিং সেন্টারে ভাষা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীমঙ্গল স্টুডেন্ট সোসাইটির সভাপতি মেঃ শামিম আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নারি হোসেনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৬ নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ আরজু মিয়া। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন দারুল আজহার ইনস্টিটিউট শ্রীমঙ্গলের ভাইস প্রিন্সিপাল-কলামিস্ট এহসান বিন মুজাহির, মুসলিমবাগ সানস্টার যুব সংঘের সিনিয়র সদস্য শামিম আহমদ প্রমুখ। সভায় প্রধান অতিথি আরজু মিয়া বলেন-আমরা যে বাংলা ভাষায় কথা বলি এটি ঐতিহাসিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শ্রদ্ধা জানাই সেসব ভাষা শহীদদের যাদের জীবনের বিনিময়ে এ মহান মাতৃভাষা রক্ষা করেছেন। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগে অর্জিত এ ভাষা দিবসটি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। একুশ আমাদের অহঙ্কার, আত্মপ্রত্যয়। কারণ বাস্তব ক্ষেত্র আমাদের সবকিছু অর্জিত হয়েছে ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করেই। সাংবাদিক ও কলামিস্ট এহসান বিন মুজাহির বলেন-রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবসের ৬৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে এই দিনে। বাঙালি জাতির চির প্রেরণা ও অবিস্মরণীয় এই দিনটি শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হবে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে সেদিন বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, সফিউররা। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দেয়ার প্রথম নজির এটি। এ দিবসের তাৎপর্য ও চেতনাকে সমন্বিত রাখার জন্য জাতি, ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তবেই ভাষা শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে এবং এ দিবস পালন আমাদের সার্থক হবে। কাজেই ভাষা শহীদদের মর্যাদা ও মাতৃভাষার ইজ্জত রক্ষার জন্য সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের মাধ্যমে একুশের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। শামিম আহমদ বলেন- একুশের চেতনা ব্যাপক ও বিস্তৃত। আমরা সে চেতনা এখনো বাস্তবায়ন করতে পারিনি। বাংলা ভাষার বিকাশ ও সর্বস্তরে এখনো মাতৃভাষা চালু হয়নি। অপসংস্কৃতির মধ্যে আমাদের হাজার বছরের ঐহিত্য বাঙালি সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। কাজেই এ দিবসকে বিশ্ববাসীর কাছে তাৎপর্যময় করে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে অতিথিগণ বিজয়ী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পরে সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন