লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সামনেই মঞ্চ থেকে টেনে হেঁচড়ে নামিয়ে এক আওয়ামীলীগ নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মন্ত্রীর এপিএস মিজানুর রহমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ইউনিয়নগুলো থেকে আসা আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের মাঝেও হট্রগোল সৃষ্টি হয়। অনেকে ক্ষিপ্ত হয়ে বর্ধিত সভা ত্যাগ করে বাইরে চলে যান। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পযর্ন্ত বর্ধিক সভার কার্য্যক্রম চলে।
বর্ধিত সভার মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমনির-২ (আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনের আ.লীগের সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।

আদিতমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন,’ আমি মঞ্চে মন্ত্রীর পেছনে বসে ছিলাম। আকস্মিক মন্ত্রীর এপিএস মিজানুর রহমান কয়েকজন ছেলেকে সাথে নিয়ে আমাকে মঞ্চ থেকে টেনেহেঁচড়ে নামিয়ে মারধর ও হেনস্থা করতে থাকেন।” “মন্ত্রীর এপিএস মিজান নিজেই আমাকে মারধর করেছেন। তারা আমার গায়ের কোর্টটি ছিঁড়ে ফেলেছে,। “মন্ত্রীর এপিএস মিজানের সাথে যে সকল ছেলেরা আমাকে মারধর ও হেনস্থা করেছেন তাদেরকে আমি চিনিও না। তাদেরকে কোনদিনই আওয়ামীলীগের রাজনীতি করতে দেখিনি’।
নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে আরে বলেন,’ লালমনিরহাট-২ আসন থেকে সংসদ নির্বাচনের প্রত্যাশা জানিয়ে আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। এতেই চরম ক্ষিপ্ত হয়েছেন মন্ত্রীর এপিএস মিজান।’

বর্ধিত সভায় উপস্থিত আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের একাংশ জানান, আ.লীগ নেতা নজরুল ইসলাম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। যেখানে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য আছেন এবং তিনি হলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। নজরুল ইসলাম এই আসন থেকে নির্বাচন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

তবে আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের অপর অংশ বলছে, নির্বাচনে অংশগ্রহন সকলের অধিকার আছে। নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন। তিনি একজন শিক্ষক। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রীর এপিএস মিজান এটা সহ্য করছেন না। মিজান তার অনুসারীদের নিয়ে একজন আওয়ামীলীগ নেতাকে মারধর ও হেনস্থা করেছেন, এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।

তবে এ ঘটনায় সমাজতল্যাণ মন্ত্রীর এপিএস ও আদিতমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘তিনি ঘটনার কোন কিছুই জানে না। তিনি কেনই আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলামকে মারধর ও হেনস্থা করতে যাবেন। হয়তো উপস্থিত কোন নেতা-কর্মীদের সাথে তার বাকবতিন্ডা হয়েছে’। “আমার বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম যে অভিযোগ তুলে ধরেছেন তা সম্পুর্ণরুপে অসত্য ও বানোয়াট, বলেও তিনি দাবি করেন।

আদিতমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্চে বসায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে হট্রগোল দেখা দিয়েছিল। নজরুল ইসলাম মঞ্চ থেকে উঠে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। নজরুল ইসলামকে মারধর ও হেনস্থা করার ব্যাপারে তিনি অবগত নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *