মোঃ হাসান আলী ( সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা ৩নং বহুলী ইউনিয়নে রঘুর গাঁতী গ্রামের সমলয় চাষাবাদ এর আওতায় ট্রে পদ্ধতিতে প্রথমবারের মতো চারা উৎপাদন করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ
এই পদ্ধতিতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রেতে চারা উৎপাদন করা হয়। এতে ধানের উৎপাদন খরচ কমানোসহ শ্রমিক সংকট নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিসে সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ ট্রেতে ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। এই বীজ ধারা তৈরী চারা দিয়ে ১৫০ বিঘা জমিতে রোপণ করা যাবে। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা ২০ থেকে ২৫ দিনে মাঠে রোপণ করা যাবে। প্রতিটি ট্রেতে ১২০ গ্রাম থেকে ১৩০ গ্রাম ধানের বীজ বপন করা যায়। ট্রের ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ মাটি বীজ ও জৈব সার ব্যবহার করে চারা তৈরী করা হয়।পাশাপাশি বীজ বপনের ২০ থেকে ২৫ দিন পর ধানের চারাগুলো মাদুরের মতো করে তোলা হয় এর মাঝে দুই থেকে তিন বার ছত্রাক নাশক স্প্রে করা হয় এরপর চারা রোপণ যন্ত্র রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে মাঠে চারা রোপণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে একজন শ্রমিক একটি রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মেশিন দিয়ে দিনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন। ট্রে পদ্ধতিতে চারা টেনে তুলতে হয় না, তাই চারার শিকড় ছিঁড়ে না। ফলে শিকড় দ্রুত মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে।
রঘুর গাঁতী গ্রামের একজন কৃষক মোঃ আব্দুল হালিম বলেন,এ পদ্ধতিতে ধানের চারা আগে কখনো চাষ করতে দেখিনি। এই প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে ১৫০ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে সিনজেন্টা- ১২০৪ জাতে ধান চাষাবাদ করেছি। আশা করি ভালো ফলন হবে। এ বছর ফলন ভালো হলে কৃষকেরা ভবিষ্যতে আরও বেশি চাষাবাদ উৎস পাবে।
বীজবপণের সময় উপস্থিত ছিলেন ৩নং বহলী ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফরহাদ হোসেন, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্ত, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস এম শাহীন আলম, মোঃ শফিকুল ইসলাম, সহ আরো অনেকে ছিলেন।
এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি অফিসার এস এম শাহীন আলম বলেন সনাতন পদ্ধতির চেয়ে এই পদ্ধতিতে ধান চাষে ফলন বাড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি, না করে ট্রে পদ্ধতিতে বীজ বপনে করতে হবে ৩: ২ অনুপাতে মাটি ও জৈব সার মিশ্রণ দিয়ে বীজতলার ট্রেতে তৈরি করা হয়। এরপর পরিমাণ মত বীজ মাটি ও জৈব সার মিশ্রণে ট্রে তৈরী করে সমতল জায়গায় সারি সারি করে রাখা হয়। বীজতলা তৈরীর তিন দিনের মধ্যে অঙ্কুর বের হয়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা তৈরী করে রোপণ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে কৃষক ভালো মানের চারা তৈরী করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমিতে ফসল ফলাতে পারেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্ত বলেন, ‘খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সমলয় পদ্ধতিতে ট্রেতে চারা উৎপাদনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ধানের উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। সফলভাবে ফসল উৎপাদনের জন্য সমলয়ে চাষাবাদ পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় কৃষকেরা বীজ, সার ও শষ্য কর্তনসহ বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে।’