বিশেষ প্রতিনিধি, চট্রগ্রাম থেকেঃ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে এখন পর্যন্ত নারীসহ চার সন্দেহভাজন জঙ্গির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দুই জন নিজেই নিজের গায়ে থাকা বিস্ফোরক ফাটিয়ে আত্মাহুতি দেন, অপর দু’জন মারা গেছেন পুলিশের গুলিতে। তারা নব্য জেএমবি’র সদস্য বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ছয়টার কিছু আগে পুলিশ, সোয়াত, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও র্যাবের সমন্বয়ে জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিন’ শুরু হয়।
এ সময় আহত হন পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াত ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের দুই সদস্য।
অভিযানে নিহত ‘জঙ্গি’দের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি। এছাড়া আহত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই সদস্যের নামও জানা যায়নি। তাদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ঢাকার অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে, চার ‘জঙ্গি’র মধ্যে দুই জন আত্মঘাতী।
অভিযানে ওই বাড়িতে থাকা পাঁচ পরিবারের ১৮ সদস্যকে উদ্ধারের কথাও জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এদেরকে জিম্মি করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরেই এই আস্তানাটির সন্ধান পায় পুলিশ। এই আস্তানার পাশের আরেকটি বাড়িতে (সাধন কুঠির) কোমরে বোমা বাধা অবস্থায় এক নারী ও তার স্বামী পরিচয় দেয়া আরেকজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তারাই পুলিশকে ছায়ানীড় নামে এই বাড়িটির সন্ধান দেন।
সন্দেহভাজন এই দুই জঙ্গির কাছ থেকে তথ্য পেয়েই ছায়ানীড় ঘেরাও করে পুলিশ। স্থানীয় থানার পুলিশের পাশাপাশি এতে যোগ দেয় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ এবং রাজধানী থেকে যাওয়া বিশেষায়িত দল। সারারাত এই আস্তানাটি ঘিরে রাখে তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার কিছু পর বাড়িটি থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সাড়ে ছয়টার দিকে ‘অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিন’ অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযানের আগে প্রস্তুত রাখা হয় একটি সাঁজোয়া যান ও পাঁচটি অ্যাম্বুল্যান্স।
স্থানীয়রা জানান, অভিযান শুরুর পরপরই ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। ওই সময় বাড়ির ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। বিস্ফোরণের পর বাড়িটির চারপাশে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে হ্যান্ডমাইকে বারবার জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হলেও তারা ভেতর থেকে বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে বাড়িটিতে প্রবেশ করে।
অভিযানের প্রায় এক ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সোয়াত ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের আহত দুই সদস্যকে বের করে আনা হয়। পরে তাদের নেয়া হয় সিএমএইচে।