সুনামগঞ্জ প্রতিনিধঃ
সুনামগঞ্জের ডাবর-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের কোন্দানালা সেতু ধসে পড়ার ঘটনায় মঙ্গলবার দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর একটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে গঠন করা চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন। এই তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অপর দিকে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ডিজাইন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু ও ডিজাইন) শিশির কান্তি রাওকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির অপর দুজন হলেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেন ও নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহমান কাওছার।
সওজ অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, সেতু ধসে পড়ার ঘটনায় মন্ত্রণালয় থেকে আজ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে শুনেছি। বিস্তারিত কিছু এখনো জানি না। অপর দিকে সেতু ও ডিজাইন বিভাগের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত ধসে পড়া গার্ডার সরিয়ে কাজ শুরু করতে বলেছি। আগামী তিন মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের সেতু ও ডিজাইন বিভাগের তদন্ত কমিটির সদস্য নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ধসে যাওয়া সেতু আজ পরিদর্শন করেছেন তাঁরা। তদন্ত প্রতিবেদন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেওয়া হবে । এর আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে জানান তিনি।
এদিকে নির্মাণকাজ শেষের আগে সেতু ধসে যাওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নাগরিক ফোরাম আহ্বায়ক নুরুল হক বলেন, ‘সুনামগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের প্রচেষ্টায় ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রানীগঞ্জ সেতু ও ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কে সাতটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু সরিয়ে পিসি গার্ডার সেতুর কাজ চলছে। একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুগুলোর কাজ করছে। নির্মাণকাজ শেষের আগে সেতু ধসে যাওয়ার অপর সেতুগুলোর কাজ নিয়ে আমরা শঙ্কিত। তিনি অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্সের সঙ্গে সওজ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভালো সম্পর্ক থাকায় কাজে যথাযথ তদারকি নেই। নিম্নমানের কাজের কারণে সেতু ধসের ঘটনা ঘটেছে।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়ন পরিষদের পাশে সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম সেতু ৭০২ মিটার দৈর্ঘ্যের রানীগঞ্জ সেতুর কাজ চলছে। কাজে ধীরগতি ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার হচ্ছে। এম এম বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি সেতু ধসে পড়ায় আমাদের রানীগঞ্জ সেতুর কাজ নিয়েও চিন্তিত আমরা।