রংপুর প্রতিনিধি::
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাকে অবিলম্বে জাতীয়করণ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় বেতন ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যতম সদস্য ও রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা নুরুল আবছার দুলাল। এক বিবৃবিতে রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা নুরুল আবছার দুলাল জানান, ১৯৮৪ সালে সারা দেশে ১৮ হাজার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাকে রেজিস্ট্রেশন দেয় সরকার। বর্তমানে সারাদেশে ৬ হাজার ৮৪৮টি মাদরাসা চালু আছে। যেখানে ৩২ হাজার ২৪০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা পাঠদান করে আসছেন। এরমধ্যে ১৯৯৪ সালে ১ হাজার ৫১৯টি মাদরাসাকে এমপিওভুক্ত করে সারা দেশে ৬ হাজার ৭৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে সরকারিভাবে মাসিক ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করে আসছে। মাসিক ৫০০ টাকা উলে¬খ থাকলেও তা আবার তিন মাস পর পর দেয়া হয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারি হতে তা বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। সেই টাকা তুলতেও ভুগতে হয়। টাকা পান আর না পান তবুও শিক্ষকরা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলোতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাঠদান করে আসছেন। খেয়ে না খেয়ে। প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন।এসব মাদ্রাসায় দীর্ঘ ৩৪ বছর চাকরি করেও কেউ এক টাকা বেতন পাননি। হাজার হাজার শিক্ষক শুন্য হাতে অবসরে গেছেন। অনেকেই মারা গেছেন। আবার অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিভিন্ন সরকার বেতনের আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়ন করেনি কেউ। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক সমিতি রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মাওলানা নুরুল আফসার দুলাল ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা জাতীয় স্কেলে বেতন ভাতা প্রদান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান ও জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কেউই তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্যকে শিক্ষা দিলেও তারা সমাজের মূল স্রোত থেকে ছিটকে পড়েছেন। তারা সামাজিকভাবে বিপন্ন। সারা দেশের মতো রংপুর জেলায় ৩৯৬টি মাদরাসা রয়েছে। যার মধ্যে রংপুর জেলায় ২৯টি মাদরাসা অনুদানভুক্ত। তিনি আরও জানান, তারা বৈষম্যের শিকার, কারণ তাদের মতো সংযুক্ত দাখিল, আলিম, ফাযিল, কামীল মাদরাসাগুলোতে ও ইবতেদায়ী রয়েছে। শুধু আমরা প্রাইমারি স্কুলের মতো প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি হতে পড়াই বলে আমাদের মাদরাসাগুলোতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা বলে। কিন্তু উভয় মাদরাসায় একই রকম বই ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়। মান ও একই পরীক্ষার পদ্ধতি সকল নিয়ম কানুন একই। শুধু বেতন ভাতার ক্ষেত্রে পার্থক্য। কারণ তারা পায় জাতীয় স্কেলে বেতন আর আমরা পাই মাসিক ১২০০ টাকা বেতন। একই মাদরাসা কিন্তু বেতনের ক্ষেত্রে নিয়ম দুই প্রকার এটা অমানবিবক। অবিলম্বে এসব মাদরাসা প্রাইমারি স্কুলের মতো জাতীয়করণে দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *