কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
ঐতিহ্যবাহী কুড়িগ্রাম পুরাতন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষকের সীমাহীন অনিয়ম দূর্নীতে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে । তার দূর্নীতির কারনে বিদ্যলয়ের শিক্ষার মান নি¤œগামী হচ্ছে। গত তিন বছরে এস এসসি পরীক্ষার ফলাফল নি¤œ পর্যায়ে চলে এসেছে। শিক্ষকদের নানা রকম হয়রানী এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করায় শিক্ষকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম এবং দুর্নিতীর অভিযোগ এনে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে।
সংশ্ল্ষ্টি শিক্ষকরা বলছেন তার মেয়াদ উত্তীন হবার পরেও অবৈধ ভাবে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদটি দখল করে রাখার পাঁয়তারা করছেন। অভিভাবকরা বলছেন বর্তমান স্কুলের শিক্ষার মান তলানীতে ঠেকেছে। অধিকাংশ মেধাবী ছাত্রী স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে গেছেন। গত তিন বছরে এস এস সি এবং জি এস সি পরীক্ষায় দু তিনজন করে এ প্লাস পেলেও ২০১৬ সালে এস এসসি পরীক্ষায় একজন ছাত্রীও এ প্লাস পায় নি। স্কুলের বর্তমানে সকল শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষক মুখোমুখী অবস্থান নিয়ে আছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের মত ঘটনা ঘটতে পারে।
অনুন্ধানে জানা গেছে বর্তমান প্রধান শিক্ষক গত ৩ জুলাই ২০১৭ সালে অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার পূর্বে তিনি অত্যন্ত সু-কৌশলে নির্বাচিত কমিটির সভাপতি ও সদস্যগনের স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন তৈরী করে তার চাকুরির মেয়াদ বাড়িয়ে নেয় এবং উক্ত কমিটি অবৈধ ভাবে বে-সরকারী শিক্ষক প্রবিধান ৩০ ধারা মোতাবেক যদি কোন অবিভাবক সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধি ইস্তফা প্রদান করতে চায় তাহলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নিকট ইস্তফা প্রদান করতে হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অনিয়ম ও চক্রান্ত মুলক ভাবে কমিটির সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে ইস্তফা পত্র তৈরী করে গৃহীত করেন এবং উক্ত কমিটি ভেঙ্গে দেন । এবং অবৈধ ভাবে একটি এডহক কমিটি গঠন করেন। গত ৬ ডিসেম্বরও এই এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে স্কুলেটিতে কমিটি বিহীন চলছে। ফলে দারুন সমস্যায় পড়েছে স্কুলের সাধারণ শিক্ষকরা। তাদের সরকারী বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে শিক্ষরা।
শিক্ষকরা বলেন তিনি ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক হাওয়ার পর হতে বিদ্যালয়ের অনিয়ম দূর্নীতি এবং শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে প্রতিনিয়ত অশালীন ভাষা প্রয়োগ ও দূর্ব্যাবহার করেন। বিদ্যালয় সরকারী করণের নামে শ্ক্ষিকদের নিকট থেকে জোর করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এবং বিদ্যালয় কর্র্তৃক তাদের মাসিক ভাতাদিসহ যাবতীয় সুযোগ- সুবিধা বন্ধ করে দিয়ে তা আতœসাৎ করেন। তিনি সরকারী নিয়োগ বিধির তোয়াক্কা না করেই পূর্বের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর ও নিয়োগ বোর্ডের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ প্রদান করেন । নিয়োগ ও যোগদান কৃত লাইব্রেরিয়ান, অফিস সহকারী, পিয়ন, আয়া, ক্লিনার এদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেন। শিক্ষকরা আরও বলেন বিদ্যালয়ের আদায়কৃত কোন টাকা স্কুলের একাউন্ডে ঠিকমত জমা হয় না।
স্কুলের পুনাঙ্গ কমিটির সভাপতি আহমেদ নাজমিন সুলতানা জানান আমার স্বামীর অসুস্থতার কারনে ঢাকায় অবস্থান কালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক হাজেরা বেগম অবৈধ ভাবে একটি এডহক কমিটি গঠন করেন। আমি এডহক কমিটি বিলুপ্ত হাওয়ার জন্য মহামান্য হাইকোর্ট বরাবর একটি রীট মামলা দায়ের করি গত ৮ অক্টোবর মহামান্য হাইকোর্ট আমাকে আমার ম্যনেজিং কমিটির নিয়মিত সভাপতির দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়।
প্রধান শিক্ষক হাজেরা বেগম জানান আমি স্কুলের শিক্ষদের অযাথিত সুবিধা দেইনি বলে তারা আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছে বিভিন্ন দপ্তরে। যা সর্ম্পূণ মিথ্যা। আমি স্কুলের কোন অনিয়ম করিনি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ আলাউদ্দিন আল আজাদ জানান স্কুলের তদন্তের জন্য আমাকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। জেলার ঐতিয্যবাহী স্কুলটিকে বাঁচানোর জন্য কুড়িগ্রামের সর্বমহল এগিয়ে আসা উচিত। তবে স্কুলের রেগুলার কমিটি হলে স্কুলের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।