শুভ শর্মা: পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও:
পরিবেশের নানা উপাদান মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই মানুষের কর্তব্য পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা। কিন্তু পরিবশে রক্ষা না করে কেউ যদি উল্টো পরিবেশের ক্ষতি করে তবে এর পরিণতি ঘটতে পারে ভয়াবহ। এমনিক হুমকির মুখে পড়তে পারে মানুষের মূল্যবান জীবনটাই। মানুষ সচেতন কিংবা অসচেতন ভাবে নানা উপায়ে পরিবেশের ক্ষতি করে থাকে। যেখানে সেখানে আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলা তেমনি একটি।

সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌরসভা ভবনের পাশেই দেখা গেছে এমন পরিবেশ দূষণীয় কর্মকাণ্ড। ‘ক’ শ্রেণীর এই পৌরসভা ভবনের পার্শ্ববর্তী লাচ্ছি নদীর ব্রিজের দুই পাশে এবং নদীতে নিয়মিত ফেলা হচ্ছে পচা বর্জ্য। পচা খাবার, নষ্ট ভাত-তরকারি, দইয়ের খালি বাটি, ডিমের খোসা, জুসের বোতল সহ দুর্গন্ধযুক্ত বিভিন্ন আবর্জনা প্রতিদিনই ফেলা হয় এখানে। এসব বর্জ্য ফেলছে স্থানীয় কিছু হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এর ফলে লাচ্ছি নদীর পানি দূষণের পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে এখানকার প্রকৃতি ও পরিবেশ। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাবাসী ও নদী কেন্দ্রিক লোকজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাতের আঁধারে এসব বাসি-পচা খাবার এনে নদী এবং ব্রীজের ধারে ফেলে যাচ্ছে পীরগঞ্জের কিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা। প্রথমবার তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরেরবার এক রেস্টুরেন্ট কর্মচারী এসে ব্রীজের পূর্বপাশে ফেলেন দুর্গন্ধযুক্ত খাবার। এবার নাগরিক সাংবাদিকের সামনে পড়েন তিনি। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি দু-একদিন পরপর আসি পচা খাবার আর ময়লা ফেলতে। এখানে সবাই ময়লা ফেলে, তাই আমিও ফেলি।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ঐ রেস্তোরার মালিক বলেন, আমাদের প্রতিদিনের যে ময়লাগুলি জমা হয় তা ফেলার জন্য সেরকম কোনো নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় আমি কর্মচারীকে পৌরসভা যেখানে ময়লা ফেলে (পীরগঞ্জ কবরস্থানের পাশে) সেখানে ফেলতে বলেছি। কিন্তু তারা ব্রিজের কাছে ময়লা ফেলে তা আমার জানা ছিল না। এখনি কর্মচারীদের ডেকে নিষেধ করে দিচ্ছি।

তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক ব্যক্তি জানান, পীরগঞ্জের ওয়াসু হোটেল, প্রিয়াংকা রেস্তোরা সহ কয়েকটি হোটেলকে প্রায়ই ব্রিজের কাছে এবং নদীতে ময়লা ফেলতে দেখা যায়। এ বিষয়ে পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্রিজ এলকাটি পৌরসভার সাত নং ওয়ার্ডের অধীনে জানিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সাথে কথা বলতে বলেন।

যোগাযোগ করা হলে সাত নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণের বিষয়টি স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, “হোটেল-রেস্টুরেন্টের লোকেরা পৌরসভার সামনেই এসব ময়লা ফেলছে। নদীতেও তারা এসব ময়লা ফেলে। এ ধরনের কাজ বন্ধ হোক তা আমরা চাই। মেয়র এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *