‘বিএনপি একবার রাস্তায় নামলে সরকারকে কোনও ছাড় দেবে না’- এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের চলমান সঙ্কট নিয়ে আমরা বারবার আলোচনার কথা বলছি। সরকার উদ্যোগ নিলে ভাল, ব্যর্থ হলে কিভাবে আলোচনা করতে হয় বিএনপি তা ভাল করে জানে। অতীতে এরশাদ সাহেব দেখেছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমি পরিষ্কার ভাষায় বলছি খালেদা জিয়া অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরে আসবেন। খালেদা জিয়া এবং তার দল যদি একবার রাস্তায় নামেন তবে আপনার পতন ত্বরান্বিত হবে। আলোচনার মাধ্যমে আপনি যে ছাড়টা পেতেন বিএনপি রাস্তায় নামলে তখন কোনও ছাড় পাবেন না। প্রতিহিংসামূলক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে আমরা কিছুই করবো না এটা আপনার ভুল ধারণা।
তিনি আরো বলেন, হাজীদের হজ করতে দেয়ার ক্ষমতা যে সরকারের নেই তারা আবার সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেন। বিমানমন্ত্রী বলেছেন, এবার নাকি ৪০ হাজার হজযাত্রী হজ্জে যেতে পারবেন না। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর গুম-খুন ছাড়া কোনও কিছুতেই বর্তমান সরকার দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। এত বড় দুর্নীতিবাজ সরকার এ দেশে আগে কখনও আসেনি।’
সম্প্রতি খুলনায় ছাগলকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকের ওপর অমূলক হয়রানির কথা তুলে ধরে দুদু আরও বলেন, আজকে দেশে আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই। ছাগলের ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করলে মন্ত্রীর বদনাম হয় এবং সাংবাদিকদের জেলে যেতে হয়। আজকে সরকারই তো ছাগলের মত আচরণ করছে। সাংবাদিকরা কি এতোই বোধজ্ঞানহীন যে কোনটা লিখতে হবে কোনটা লিখতে হবেনা তা তারা জানে না। আইন করছেন বলে শুধু তারা নয় রাজনৈতিক নেতাদেরও আপনারা অপদস্থ করছেন।অবিলম্বে এই ৫৭ ধারা আইন বাতিলের দাবি জানান তিনি।
শামসুজ্জামান দুদুি বলেন, বাতিল আমরা চাই এই সরকারের। এই সরকার যতদিন বাতিল না হবে দেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি, অর্থনীতি কোনও কিছুই ঠিক হবে না।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন আমরা করতে চাই এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। আমাদের নেত্রী, মহাসচিব সবাই বলেছেন নির্বাচনে বিএনপি যাবে এতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতেও নির্বাচনে যেতে চেয়েছি, কিন্তু আমাদেরকে নির্বাচনে যেতে দেয়া হয়নি। এবারও ঠিক সে রকম একটি নির্বাচন করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বর্তমান সরকার। আর সেই অভিসন্ধি পূরণের লক্ষ্যেই একটি ‘পুতুল নির্বাচন কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। তারা সে রকমই একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।দুদু আরো বলেন, শেখ হাসিনা আর একবার ক্ষমতায় থাকতে চায়, তাদের নেতারা এমনটাই বলেন। আর সেজন্যেই তারা এ রকম একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে। কিন্তু জনগণকে ঠকিয়ে দিবাস্বপ্ন যতই দেখেন তা আর বাস্তবায়ন হবে না। কেননা বিএনপি এবার নির্বাচনে যাবে, সহায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে এবং ক্ষমতায়ও আসবে। আর সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া।বগুড়ায় মা-মে ধর্ষণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তুফান কেন বহিষ্কার হবে। সরকার নিজেই তো বহিষ্কার হওয়ার মত কাজ করেছে, করছে।আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো.রাসেল খাঁনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈশা, কল্যাণ পার্টির ভাইস-চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তামান্না, জিনাফের সভাপতি মিয়া মো.আনোয়ার, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম ভূইয়া, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ আলিম, সংগঠনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোঃ ফারুক, কৃষক দল কোতয়ালী থানার সভাপতি মোঃ হৃদয়, সোহেল, কবি নজরুল কলেজের ছাত্রনেতা আহম্মেদ শাকিল প্রমুখ। ও সংগঠনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।