নাটোর প্রতিনিধি ঃ নাটোরের লালপুরের ১০ নং কদিমচিলান ইউনিয়নের অনেক কাচা রাস্তার কারণে জনদুর্ভোগের শেষ নেই। বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে ঘুরে পাকা না হওয়ায় এলাকাবাসী বেশ হতাশাগ্রস্থ। উপজেলার ধলা সেকচিলান, দাইড়পাড়া এলাকার কাচা রাস্তাগুলো পাকাকরনে কথা বলে স্বাধীনতার পর থেকে অনেক জনপ্রতিনিধিরা ভোট নিয়ে গেছেন। তবে ভোটের পর কেউ কথা রাখেনি। আর জনগনের সেই দুর্বলতার সুযোগে এলাকার রাস্তাঘাট নির্মাণ করেদেওয়ার কথা বলে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসান স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি শাহজাহান আলী ও ৪ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি ফজল আলী । তারা বলেন তোমরা আমাদের জুয়ার আসর চালাতে দিলে আমরা তোমাদের রাস্তাঘাট নির্মাণ করে দেব। তবে জনপ্রতিনিধিরা ভোট নিয়ে কথা না রাখলেও জুয়ার আসরের পরিচালকরা এলাকাবাসীর প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামে গত দুই বছর জুয়ার আসর বসিয়ে ইট, বালু দিয়ে দাইড়পাড়া মহাসড়ক থেকে পঞ্চগ্রাম কবরস্থান পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা পাকা-করা হয়েছে। তবে রাস্তা পাকা হলেও দুর্ভোগ কমেনি এলাকাবাসীর। জুয়ার আসরের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে এলাকায় বাইরের লোকজনের আনাগোনা বাড়ে। এলাকা ছেয়ে যায় মাদকে। তরুণরা ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকসেবনের প্রতি ঝুঁকতে থাকে। গরু চুরিসহ নানা সমস্যা বৃদ্ধি পেয়ে যায় দুই বছরেই। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের নজরে এলে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়াই খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু খবরটি শুধু পত্রিকাগুলোর শিরোনামেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়নি বরং প্রশাসনের সাথে যা চুক্তি হয়েছিলো বর্তমানে তার দ্বিগুন হয়েছে। আর সে কারণেই জুয়ার আসর আরো বেশি প্রশার হয়েছে। তবে বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর শুধুমাত্র স্থান পরিবর্তন হয়েছে। বেলগাছি গ্রাম থেকে স্থান পরিবর্তন করে ধলা গ্রামের সিরাজ হাজির বাগানে বসানো হয়েছে। নতুন ইট বের হলেই সেখানকার রাস্তা পাকাকরন করা হবে এ মর্মে সেখানকার সাধারন মানুষদের বুঝিয়ে এবং জমির মালিককে নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে সেখানে জুয়া চালানো হচ্ছে। সাংবাদিকরা খবর প্রকাশের পর আরো বেশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জুয়ার আসরে কেউ যেন ছবি না তলতে পারে সে জন্য কমিটির কয়েকজন লোক নিযুক্ত করা হয়েছে। জুয়ার আসরের এলাকায় দেশীয় অস্ত্র সহ ঘোরাফেরা করেন নিজস্ব বাহিনী। এছাড়াও প্রশাসন অথবা মিডিয়ার লোকজন যাওয়ার আগেই যেন সতর্ক করা যায় সেজন্য দাইড়াপাড়া হাইওয়ে রাস্তার সাথে জুয়ার আসরের নিজস্ব লোক নিযুক্ত করা আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, বর্তমান ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি হাসান আলী, সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, থানা আ’লীগ সহ- ইউনিয়নের বড় বড় নেতাদের তত্বাবধানে এ জুয়া চলছে। বিএনপির সময় বিএনপি বিএনপির থানা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের তত্ববধানে এই জুয়া চলতো। আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আ’লীগ সভাপতি হাসান আলীসহ ইউনিয়নের নেতৃবর্গ থানা আ’লীগ কে ম্যানেজ করে এই জুয়া চালাচ্ছে। সে কারনে প্রশাসন জেনেও ব্যবস্থা নেয়না। শুধু তাই নয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়াড়– বলেন, এখানে জুয়ার জগতের সব ধরনের খেলায় চলে। এখান থেকে লালপুর থানাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাসিক মাসোয়ারা পান। সে কারণে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারেনা। সাংবাদিকরা একবার নিউজ করে কয়েকদিন বন্ধ ছিলো। তারপর স্থান পরিবর্তন করে ধলা গ্রামে চলছে। সেখানে প্রাক্তন ইউপি সদস্য আলম মেম্বারের নেতৃত্বে রয়েছে দেড় শতাধিক মাদকসেবী এবং যাদের কাছে রয়েছে দেশীয় অস্ত্র । আর সে কারনেই কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না বলে জানান এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *