ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার ঃ
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কালেঙ্গা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার ১৪২ মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ প্রমানীত হয়নি।
ওই ১৪২ মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ ছিলো- আবদুর রশিদ একজন কুখ্যাত রাজাকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনী সঙ্গে নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করেন। রাজাকারদের সঙ্গে আঁতাত করে আবদুর রশিদ অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যাও করান। তিনি ১৯৯৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দান ও সুযোগ-সুবিধা ভোগে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ। এর প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অভিযোগটি তদন্তের জন্য কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করে। অপরদিকে, কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের গত ০৭/১২/২০১৬ইং তারিখের ৪১.০১.৫৮৫৬.০০০. ২৭.৩৪৫.১৬.৪০৩নং স্মারকমূলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদের মুক্তিযোদ্ধা সম্মানীভাতা স্থগিত করা হয় এবং তদন্ত কমিটি ১৪২ মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কমিটির অনুষ্ঠানিক তদন্তে, উভয়পক্ষের স্বাক্ষ্যে ও কাগজাত যাচাইয়ে-দেখা যায়, উভয়পক্ষের মুক্তিযোদ্ধারাই কমলগঞ্জের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা নন। এজন্যে তদন্ত কমিটির কেহই তাদের শনাক্ত করতে পারেননি। এ কারণে সঠিক তথ্য উদঘাটন সম্ভব না হওয়ায় ১৪২ মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ প্রমানীত হয়নি। এর প্রেক্ষিতে কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের গত ০৭/১২/২০১৬ইং তারিখের ৪১.০১.৫৮৫৬.০০০.২৭.৩৪৫.১৬.৪০.৩ নং স্মারকমূলে স্থগিতকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদের মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের গত ১৫/০৬/২০১৭ইং তারিখের ০৫.৪৬.৫৮৫৬.০১১.০১.০০৮.১৬/৩৬২নং স্মারকমূলে পুণর্বহাল করা হয়।
বর্তমানে কালেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ জানান- জেলা প্রশাসক বরাবর বন্দোবস্তের আবেদনকৃত ভূমি ‘কারো ভোগ-দখলে নেই মর্মে’ প্রত্যয়ন করার অনুরোধ রক্ষা করা সম্ভব না হওয়ায় বর্তমানে কালেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফুর প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে ভুল বুঝিয়ে মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার ১৪১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সহযোগী করে আমার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিব স্বাক্ষরিত আমার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নং ম- ৪৮৭৫৪, তাং ২৯/০২/২০০৪ইং, আইডি নং/বার কোড- ০৭০২০৬০০৪৮, মুক্তিবার্তা নং (লাল বই)- ০৫০৪০৩০১৫১, গেজেট নং ৯৮৮, তাং ৩১/০৮/২০০৫ইং, পৃষ্ঠা ৮৩৮৩, এনআইডি নং ৫৮১৫৬৭৬৮৯৭০৫৫ উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ তার মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত কাগজাত এ প্রতিনিধিকে দেখান। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ আরও বলেন- প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফুর এবং তার কথায় ভুল বুঝে যেসব মুক্তিযোদ্ধা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে দীর্ঘ ৭ মাস আমাকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা থেকে বঞ্চিত রেখেছেন তাদের এবং সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে ও আতœপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে প্রায় ১ মাস পূর্বে নিষ্পত্তি হওয়া উক্ত অভিযোগের নিয়ে যারা অভিযোগকারীদের অনুরুপ আমাকে রাজাকার উলে¬খে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন তাদের বিচারের দাবী জানাচ্ছি সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *