শফিউল আলম শফি,কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামে পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন না করে কেজি দরে বাজারে বিক্রির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়েরের ৮ মাস পার হলেও অদৃশ্য শক্তির জোরে বহাল তবিয়তে আছেন সদর উপজেলার পাঁচগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র বলছেন, তার নামে বিভাগীয় মামলার শুনানী ৮মাস আগে শেষ হলেও রায় ঝুলে আছে। কবে রায় হবে তাও নিশ্চিত করে বলছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। একারনে সব মহলে চাউর হয়েছে যে তার এত খুটির জোড়! এলাকাবাসী জানান, বিদ্যালয়ের পাশে তার বাড়ি হলেও থাকেন ৮কিলো দুরে জেলা শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায়। সেখান থেকে নিজের ইচ্ছে মাফিক বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করেন। ফলে অভিভাবক এবং স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য,পাঁচগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০১৬ সালের তৃতীয় শ্রেনীর বার্ষিক পরীক্ষার ৯৬টি উত্তরপত্র এবং সমাপনী মডেল টেস্ট পরীক্ষার ১০টি উত্তরপত্রের মূল্যায়ন না করে ঐ বছরের ১৩ ডিসেম্বর তা মুদির দোকানে বিক্রি করে দেন। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিক জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালে পরদিন ১৪ ডিসেম্বর খাতাগুলো উদ্ধার করা হয়। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাগীয় তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের উপ-পরিচালক বিগত ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন এবং তার নামে বিভাগীয় মামলা হয়। স্থানীয় অধিবাসী ও অভিভাবক আমিনুল ইসলাম, নুর ইসলাম, কয়ছার আলী ও ভজু মিয়া জানান, পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন না করে বাজারে বিক্রি করা-দুঃখজনক ও বেআইনী। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন জানান, পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন না করে বিক্রি করা ও কোন কাজে সহযোগিতা না করা তার স্বভাব। বিদ্যালয়ে এসে নিজ ইচ্ছেমত চলে যান। হাজিরা খাতায় লালকালি দিয়ে অনুপ¯ি’িত লেখা হলেও তিনি তা কালো কালি দিয়ে মুছে দেন। সে কাউকেও মানে না। এ জন্য আগের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার রায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। জানতে চাইলে শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে। এজন্য পুণ:তদন্ত চেয়েছি’। সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান জানান, তিনি এক মাস আগে এখানে যোগদান করেছেন। এজন্য শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী জানান, সহকারি শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভাগীয় মামলার জবাব গ্রহণ ও শুনানী শেষ হয়েছে। দ্রুত রায় প্রদান করা হবে।