বিজয় রায়,রাণীশংকৈল প্রতিনিধি ঃ
রাস্তা সংস্কার কাজের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরতে ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করার সময় সাংবাদিকের ক্যামরা আটকে ধরে চিত্র ধারণে বাধা প্রদান করে খারাপ ব্যবহার করেছেন সড়ক ও জনপথের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলী। মঙ্গলবার বিকেলে রাণীশংকৈল থেকে হরিপুর মহাসড়কের বলিদ্বারা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
চিত্র তুলতে বাধার শিকার সাংবাদিক ফারুক আহাম্মদ সরকার দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি এবং রাণীশংকৈল প্রেস ক্লাবের সভাপতি। অভিযুক্ত প্রকৌশলী রায়হান আলী বর্তমানে ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপথের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে রাণীশংকৈল উপজেলায় কর্মরত আছেন।
সাংবাদিক ফারুক হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাণীশংকৈল থেকে হরিপুর মহাসড়ক সংস্কার কাজের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিলো। এ সময় কার্পেটিংয়ে নি¤œ মানের এবং বড় বড় পাথর দিয়ে কার্পেটিং এর কাজ চলছে বলে আমার মুঠোফোনে অভিযোগ করে স্থানীয়রা।
তিনি আরও বলেন, মোবাইলে অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলীর সামনেই নি¤œ মানের পাথর ও বড় বড় পাথর দিয়ে কার্পেটিং চলছে এবং উপরে নিয়মনুযায়ী পাথর দিয়ে রোলার দিয়ে ফিনিশিং দিচ্ছে। যদিও বড় ছোট পাথরের মিশ্রণে এবং রোলারে তা সমান না হয়ে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এমন অনিয়মের চিত্র ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যামেরা আটকে ধরেন ওই প্রকৌশলী।
পরে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক সড়কের সংস্কার কাজের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশসহ সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন সড়ক ও জনপথের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলী।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাণীশংকৈল জিরো পয়েন্ট থেকে হরিপুর উপজেলার জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত মোট আটত্রিশ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণসহ সংস্কার করার চুক্তি করেছেন। তারই কাজ চলছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলী মুঠোফোনে জানান, রাস্তার কাজ যেদিকে সমাপ্ত হয়েছে সেদিকে উনি (সাংবাদিককে) ছবি না তুলে চলমান রাস্তার কাজের ছবি ধারণ করছিলেন। আমি ক্যামেরা ধরিনি। শুধু উনাকে (সাংবাদিককে) বলেছি যেদিকে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ওইদিকের ছবি ধারণ করতে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫মাস হলো। কাজে কোন অনিয়ম করছি না আমরা। তাছাড়া আমি সার্বক্ষণিক দেখাশুনা করে যাচ্ছি।
ঠাকুরঁগাও সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মুনসুরুল আজিজ বলেন, সাংবাদিকের ক্যামেরা আটকে ধরার ক্ষমতা কারো নেই। আর যদি রাস্তা সম্পর্কিত কোন তথ্যের প্রয়োজন হয়। আপনি জেলা অফিস থেকে নিতে পারবেন।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাণীশংকৈল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম শাওনসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা। তারা জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা না চাইলে কর্মসুচি হাতে নেওয়া হবে হুশিয়ারী দেন জেলা- উপজেলার সাংবাদিক নেতারা।
জেলা প্রশাসক কে.এম কামরুজ্জামান সেলিম বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছেন।