রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ-
ঠাকুরগাওঁয়ের রাণীশংকৈলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আসন্ন ত্রি বার্ষিক কাউন্সিলকে ঘিরে উপজেলা ও পৌর শাখার মেয়াদর্ত্তীণ কমিটি গঠনে বর্তমান উপজেলা ও পৌরসভা শাখা আ’লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকরা তাদের ইচ্ছেমত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড এবং পৌর ওর্য়াড কমিটির সভাপতি সম্পাদকসহ কাউন্সিলর(ভোটার) নির্বাচিত করছেন।অভিযোগ উঠেছে তাদের আত্বীয় স্বজন আস্থাভাজনদের কাউন্সিলর নির্বাচিত করছেন এতে প্রবীণ ত্যাগী আ’লীগারা বঞ্চিত হয়ে নব্য আ’লীগাররা কাউন্সিলর মনোনীত হচ্ছেন। আ’লীগের অপর একটি অংশের অভিযোগ আ’লীগের কমিটি হবে প্রচার প্রচারণা ও জাকজমাক সম্মেলনের মাধ্যমে অথচ কমিটি হচ্ছে মাঠে ঘাটে রাতের আধারে। এতে মতামত নেওয়া হচ্ছে না আ’লীগের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতাদের। এ নিয়ে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে রাতের আধারে পকেট কমিটি করতে গিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে যা মামলা প্রর্যন্ত গড়িয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আ’লীগের একটি অংশের নেতা উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মোসারফ হোসেন বুলু ও যুগ্ন সম্পাদক আনিসুর রহমান বাকী। তারা সে-সময় বলেছিলেন বর্তমান উপজেলার ইউনিয়ন ওর্য়াড ও পৌর আ’লীগের ওর্য়াড কমিটিতে সত্যিকারের আ’লীগের ত্যাগী নেতারা পদ-পদবীসহ আ’লীগের কমিটিতে আসতে পারছে না। এবং কি উপজেলা ও পৌর আ’লীগের সভাপতি সম্পাদক নির্বাচনে কাউন্সিলর তাদের ইচ্ছেমত আত্বীয় স্বজন আস্থাভাজন কিংবা ব্যক্তি সমর্থনকারী ও অন্যরাজনৈতিক দলের সর্মথনকারীদের মনোনীত করা হবে বলে তারা অভিযোগ করেছিলেন। তাদের অভিযোগ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক সইদুল হক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহম্মেদ পৌর আ’লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মহাদেব বসাক নিজেরা পূণরায় নির্বাচিত হওয়ার উদ্যোশে তারা পকেট কমিটি করছেন। এরই প্রেক্ষিতে এ প্রতিবেদক আসন্ন পৌর আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পৌরসভার গঠিত ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি সম্পাদক ও কাউন্সিলর মনোনীত করার বিষয় নিয়ে গত ২৫ অক্টোবর -০১ নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে। এতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবীণ আ’লীগারদের এবং র্দীঘদিন ধরে পৌর ওর্য়াড আ’লীগে নেতৃত্ব দেওয়া নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন মুখ কিংবা এক সময় অন্যরাজনৈতিক দলের সমর্থনকারীদের ওয়ার্ডের সভাপতি সম্পাদক ও কাউন্সিলর মনোনীত করেছেন পৌর আ’লীগের বর্তমান দায়িত্বশীল নেতারা। এতে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে রাজনীতি তেমনভাবে জড়িত নই কিংবা ওর্য়াড আ’লীগের নিজের স্ত্রী ভাই বোন ভগ্নিপতি চাচাতো ভাই ওর্য়াড নেতার ছেলে ও নব্য আ’লীগের সমর্থনকারী। পৌর আ’লীগের অনুমোদিত কাউন্সিলর তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের সম্মেলন কোন প্রচারণা ছাড়ায় হঠাৎ করে আয়োজন হয়েছে তবে তা সর্বোচ্চ ১ঘন্টার মধ্যে শেষ হয় বলে নিশ্চিত করে উপস্থিত এক আ’লীগের নেতা। তবে সে যাত্রায় কমিটি গঠন হয়নি পৌর আ’লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সরকার সম্পাদক মহাদেব বসাক কমিটি না করেই স্থান ত্যাগ করে পরে পার্টি অফিস থেকে প্রবীণ ও ত্যাগী আ’লীগারদের মতামত বাদ দিয়ে আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও পৌর ওয়ার্ডের নতুন ভোটার উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক সইদুল হকের ব্যক্তিসমর্থনকারী চা ব্যবসায়ী আলীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করেন। তারা আবার আ’লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১৯জন কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন সভাপতি আনোয়ারের ভাই জাহেরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর আলম ওমর শরীফ স্ত্রী আকলেমা বেগম ভগ্নিপতি নুরুজ্জামান খালাতো ভাই রুবেল হোসেন সাধারণ সম্পাদক আলীর ভাই আবুল কাশেম। এ ওর্য়াডে আবার পৌর শহরের বাইরের নন্দুয়ার ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের সন্ধারই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে সুমন আলীকে ভোটার করা হয়েছে। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি আজাহারুল দুই ছেলে রানা বেল্লাল জাতীয় পার্টি থেকে আসা নব্য আ’লীগার আবু সাঈদসহ রাজনীতিতে জড়িত নই। ৫ নং ওর্য়াডে একই পরিবারের কিসমত আলীর চার ছেলে শামসুল হক নজরুল হক রেজাউল করিম মঞ্জরুল মাষ্টার কে কাউন্সিলর নিবার্চিত করা হয়েছে একইভাবে পৌর আ’লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের চাচা মুক্তারুল ইসলাম স্ত্রী উপজেলা যুব মহিলা লীগের সম্পাদক আকতারীকে কাউন্সিলর নির্বাচিত করা হয়েছে। এছাড়াও বাকী ওর্য়াডগুলোতে বিএনপি জাপা থেকে আ’লীগে যোগদানকারীদের কাউন্সিলর নির্বাচিত করা হয়েছে। এদিকে পৌর আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন সরকার তার স্ত্রী ভাই ভাইয়ের বউদের এবং ভাতিজাদের কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন ৩ নং ওয়ার্ডে। এদিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পৌর মেয়র আলমগীর সরকার বিগত সম্মেলনে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করলেও তিনি পৌর আ’লীগের বর্তমানে কাউন্সিলর মনোনীত হয়ে রয়েছেন তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম সরকার বর্তমানে পৌর আ’লীগের সভাপতি রয়েছেন এবারো তিনি সভাপতি পদ প্রত্যাশী।
কমিটি গঠন প্রসঙ্গে আ’লীগের প্রবীণ নেতা উপজেলা আ’লীগের সাবেক সম্পাদক জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদের গতকাল সোমবার মুঠোফোনে বলেন, কমিটি হচ্ছে শুধুমাত্র দায়সারা উপজেলা ও পৌর আ’লীগের বর্তমান সভাপতি সম্পাদকরা নিজেদের পূনরায় নির্বাচিত করার উদ্যোশে তারা পকেট কমিটি করছেন এবং কি সম্মেলনগুলোতে আমরা দাওয়াত পর্যন্ত পাচ্ছি না। সম্মেলন হচ্ছে না লোক দেখানো সভা দেখিয়ে ইচ্ছেমত কমিটি ঘোষনার উৎসব হচ্ছে তা আমি বুঝতে পারছি না। কি আর বলবো সাংবাদিক ভাই হাইব্রিডডের দাপটে আমরা ত্যাগী আ’লীগের কর্মিরা কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছি। মোঃ বাবর আলী উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক(১৯৮৭-৯১) সাধারণ সম্পাদক(১৯৯২-৯৭) উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক(১৯৯৮-২০০৪) বর্তমানে উপজেলা আ’লীগের সদস্য। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ছাত্র রাজনীতি করা কালে যারা আমাদের বিপক্ষ শক্তি ছিলো তারা এখন দল পরিবর্তন করে আমাদের চেয়ে আ’লীগে তাদের বেশি শক্তি প্রয়োগ করছে তাদের অপশক্তির কাছে আমরা অসহায় অবস্থায় পড়েছি। তারা নতুনভাবে আ’লীগে এসে একত্র হয়ে এখন আমাদের উপর অপশক্তি ব্যবহার করে আ’লীগককে নিজেদের ব্যক্তি দল বানিয়ে সব কলকাটি নাড়ছেন। তাদের কাছে আমরা বড় অসহায় হয়ে পড়েছি। পৌর কমিটি প্রসঙ্গে জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সংরক্ষিত সাংসদ সেলিনা জাহান লিটা বলেন, কমিটি গঠন নিয়ে অনেক অভিযোগ শুনছি। এবং লক্ষ করছি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি ও কাউন্সিলে ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষিত কোটায় পদ-পদবী দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। এদিকে পৌর আ’লীগের সম্পাদক মহাদেব বসাক মুঠোফোনে বলেন,২ নভেম্বর ত্রি বার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো তবে বিশেষ কারণে হয়নি বর্তমানে অনির্দিষ্টকালের জন্য সম্মেলন বন্ধ রয়েছে। আর বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন,এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন