বিশেষ প্রতিবেদক, ভাঙড়, সাত নভেম্বর: রাজনীতি-বিতর্ক ছাড়াই কবিতার আকাশে ভাঙড়। সফল আন্তর্জাতিক ভারত বাংলাদেশ কবিতা উৎসবে বিশেষ বার্তা দেওয়ার আহ্বান। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব যা সবার মনে গভীর দাগ কাটে।
ভাঙড় এলাকার কবিদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে দেখার মতো।
সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিমন্ড গড়ে তুলতে ভাঙড়ের ভাবমূর্তি ইতিবাচক করতে এগিয়ে এলেন ভাঙড় এলাকার শুভবুদ্ধির মানুষেরা।
ভাঙড়ে অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব-২০১৯, ভাঙড়-১ নং পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে। এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত একঝাঁক কবি ও সাহিত্যিক। আর তাঁদের স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন এপার বাংলার প্রথিতযশা কবিদের সঙ্গে এক ঝাঁক তরুণ কবি ও সাহিত্যিক ।
এদিনের আন্তর্জাতিক কবি সম্মেলন সফল করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন ভাঙড়ের ভূমিপুত্র তথা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ফারুক আহমেদ। এদিন ফারুক আহমেদ-এর হাতে বিশেষ সম্মাননা তুলে দিলেন ভাঙড়ের বিডিও সৌগত পাত্র।
ওপার বাংলা থেকে তিনশতাধিক বইয়ের বহুমাত্রিক লেখক সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ ও বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্ত কবি ও ছড়াকার আসলাম সানীর নেতৃত্বে আরও যাঁরা উপস্থিত থেকে কবিতা পাঠে অংশগ্রহণ করলেন তাঁরা হলেন প্রিয়মুখ প্রকাশনের প্রকাশক স্বনামধন্য লেখক ও কবি আহমেদ ফারুক, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কারণে ছুটে বেড়ানো তরুণ কবি রমজান বিন মোজাম্মেল।
এছাড়াও বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে কবিতা পাঠে বিশেষ দাগ কাটেন কবি এম আর মনজু, আব্দুল গনী মিয়া, শাহনেওয়াজ পারভীন শান্তি প্রমুখ। বাংলাদেশ কবিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার লসএঞ্জলেস থেকে আগত প্রবাসী বাঙালি কবি চিন্ময় রায়চৌধুরী ও সঙ্গীত শিল্পী অঞ্জলি রায়চৌধুরী।
এপার বাংলা থেকে স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশগ্রহণ করেন স্বনামধন্য কবিদের মধ্যে কবি ফারুক আহমেদ, আবদুর রব খান, অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়, লালমিয়া মোল্লা, সবিতা দত্ত, অভিজিৎ মন্ডল, আবদুস শুকুর খান, তাজিমুর রহমান, সিদ্ধার্থ সিংহ, হরিশঙ্কর কুন্ডু, মিলন মান্নান, রাজু মন্ডল, মিঠুন মন্ডল, প্রবীর রঞ্জন মন্ডল, সুব্রত চক্রবর্তী, তাপস সাহা, মুকুল চক্রবর্তী, সুখেন্দু মজুমদার, মেঘনাথ বিশ্বাস, প্রসোনজিৎ রায়, বিধান পুরকাইত, দুর্গা বেরা, শেখ কামালউদ্দিন, শাহজাহান মন্ডল, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, সুজাতা দাস, স্বপন ভট্টাচার্য, অর্চনা দে বিশ্বাস, শ্রীমতী সরস্বতী দাস, রবীন সরকার, মধুমিতা মন্ডল, অশোকা মন্ডল, আবদুর রাজ্জাক, সোনালি রায়, আরফিনা মন্ডল, লিটন রাকিব, মুকন্দ রায়, সাবিনা ইয়াসমিন, মোক্তার হোসেন মন্ডল, দীননাথ গোলদার, আবদার রহমান, সুমন পাল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল কবি-সাহিত্যিকদের ভাঙড়-১ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে উত্তরীয়, স্মারক ও পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাহাজাহান মোল্লা জানান, ভাঙড়ে শুধু কবিতার জন্য এমন অনুষ্ঠান এই প্রথম হলেও এখানেই শেষ হবে না। এর ধারাবাহিকতা তাঁরা বজায় রাখবেন।
ভাঙড়-১-এর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌগত পাত্র আগামী দিনে এমন অনুষ্ঠান আবারও আয়োজন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই আয়োজনের নেপথ্য কারিগরদের তিনি অভিনন্দন জানান।
এমন অনুষ্ঠানে আগামী দিনে তাঁর সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে জানান শিস-এর ডিরেক্টর এম এ ওহাব।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য কাইজার আহমেদ বলেন, এই সব অনুষ্ঠান ভাঙড়ে আগামী দিনে আরও বেশি-বেশি করে আয়োজন করার মাধ্যমে তথাকথিত এক-শ্রেণির মিডিয়া চর্চিত ভাঙড়ের দুর্নাম ঘোঁচাতে পারবে। ভাঙড়ে প্রতিবছর বইমেলাও হবে।
ফারুক আহমেদ বলেন, এই শুভ সূচনার মধ্যে দিয়ে ভাঙড় এলাকার মানুষ বাঁচার মতো বাঁচতে নতুন আকাশ পাবেন আগামীতে।
ভাঙড়ে অনুষ্ঠিত এ-জাতীয় প্রথম এই অনুষ্ঠানে কবিতা প্রেমী মানুষজনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুচারু রূপে সঞ্চালনা করেন ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. নিরুপম আচার্য ও শেষ পর্বে অভীক পাল।