কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদ-নদীর চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। এবার ৩শত ৫৯ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে, সহজ উপায়ে লাভজনক ফসল ভুট্টা চাষে ভুট্টার সম্ভাবনাময় বাম্পার ফলন কৃষকদের মাঝে আশার আলো জাগিয়ে তুলেছে। ভুট্রা চাষের জন্য চাষীরা দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলায় এ বছর ভুট্টা চাষ গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উলিপুরে ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দিন দিন বেড়ে চলেছে। গত বছর ভুট্রা চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ২শত ৯১ হেক্টর জমি। অর্জিত হয়েছে ৩শত ১৫ হেক্টর জমিতে ২৬শত মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছিল। এবছর ৩শত ৫৯ হেক্টর জমিতে ২হাজার ৮শত ৭২ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। সূত্র জানায়, যেসব জমিতে অন্য ফসল হয় না সে সব জমিতে মাত্র ১২০-১২৫ দিন সময়ে অল্প ব্যয়ে এক বিঘা জমিতে ৩০হাজার টাকার ভুট্টা উৎপাদন করা সম্ভব হয়। উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদ-নদীর চরাঞ্চল কৃষকরা স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে সহজ উপায়ে লাভজনক ফসল ভুট্টা চাষে ঝুকে পড়েছে। বন্যায় বালু জমিতে পলিমাটির আবরণ পড়ায় ভুট্টার সম্ভাবনাময় বাম্পার ফলন কৃষকদের মাঝে আশার আলো হিসাবে দেখা দিয়েছে।
হাতিয়া ইউনিয়নের ভুট্টা চাষী আব্দুল মজিদ বঙ্গবাসী জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ভুট্টা চাষ চরাঞ্চলের কৃষকদের মাঝে অত্যন্ত লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ভুট্টা চাষে এক-দুইবার সেচ দিতে হয়। ক্ষেতে কোন আগাছা না জন্মানোর কারণে শ্রমিকও কম লাগে। তাই ভুট্টা চাষে খরচ অত্যন্ত কম হয়। নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের অনাবাদী বালু জমিতে ভুট্টা চাষ করে অসংখ্য কৃষক জীবন-জীবিকার পথ খোঁজে পেয়েছে। অনেকে ভুট্টা চাষ করে বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করে থাকেন। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদারের পরামর্শে আমি গত বছর ৬একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এবার ৮একর জমিতে চাষ করেছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করি গত বছরের চেয়ে এবার বেশী আয় হবে।
স্থানীয় কৃষিবিদরা জানান, নদী ভাঙনে যেসব কৃষক ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছিলো। ভুট্টা চাষ করে ওইসব কৃষক আবারো স্বাবলম্বী হয়েছে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করার সম্ভবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর বন্যায় বালু জমিতে পলিমাটির আবরণ পড়েছে আশা করি গত বছরের তুলনায় এবারও লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলনও ভাল হবে। উপজেলা কৃষি সম্পাসরণ অফিস থেকে পুর্নবাসন কর্মসুচীর আওতায় ৯শত কৃষক-কৃষাণীকে ভুট্রা চাষের জন্য বিনামুল্যে সার ও বীজ দেয়া হয়েছে। চাষীদেরকে ভুট্রা চাষের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগীতা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *