কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
চলমান এসএসসি পরীক্ষার আজ মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত বাংলা ২য় পত্রের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শক মোছা: চায়না বেগমকে অপদস্থ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের শ্যালক এনামুল হক। এসময় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালকের মেয়ে ওই কক্ষের পরীক্ষার্থী অর্পিতা কক্ষ পরিদর্শক ওই শিক্ষিকাকে পুলিশে দেয়ার হুমকি দেয়। অর্পিতা থানাহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী এবং ওই কেন্দ্রের ১২ নম্বর কক্ষে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
পরীক্ষা শেষ হলে এনামুল আবারো দলীয় লোকজন নিয়ে এসে ওই শিক্ষিকার উপর চড়াও হয়। পরে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে চায়না বেগম। এসময় উত্তপ্ত ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। চিলমারী বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক ও কক্ষপরিদর্শক চায়না বেগম জানান, সময় পার হওয়ায় পরিক্ষার্থীর উত্তর পত্র নেয়ায় প্রথমে ওই পরীক্ষার্থী
পুলিশে দেয়ার হুমকি দেয় পরে তার বাবা এসে আমাকে অপদস্থ ও অসম্মান করেন। পরীক্ষা শেষে লোকজন এনে আমার উপর চড়াও হন ।
কেন্দ্র সচিব ও থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেফাউন নাহার জানান, প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক এনামুল হকের মেয়ে অর্পিতা ১২নম্বর কক্ষের একজন পরীক্ষার্থী বাংলা ২য় পত্রের নৈর্ব্যতিক পরীক্ষা আধঘন্টা সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয়। এ সময়ের মধ্যে সকল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা শেষ করে সাড়ে দশটায় উত্তর পত্র জমা দিলেও ওই পরীক্ষার্থী উত্তর পত্র জমা না দিয়ে আরোও উত্তর করতে থাকে। দুই/তিন মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর কক্ষ পরিদর্শক চায়না বেগম জোড় করে তার কাছ থেকে উত্তর পত্র নিয়ে নেয়। এসময় ওই পরীক্ষার্থী চিল্লা চিল্লি এবং কান্নাকাটি করলে তার পিতা এনামুল হক পরীক্ষার কক্ষে এসে চায়না বেগমকে অপদস্থ করেন। পরে আমি গিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ শান্ত করে ওই কক্ষপরিদর্শককে ওই কক্ষ থেকে সরিয়ে অন্য কক্ষে দায়িত্ব দেই। পরীক্ষা শেষে মেয়েকে মারধোরের অভিযোগে এনে আবার উনি দলীয় লোকজন নিয়ে এসে পরিবেশ উত্তপ্ত করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিবেশ শান্ত করে চায়না বেগমকে আমি নিজে তার বাড়িতে রেখে আসি। উনি যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জানিয়েছি।
ওই কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষক জানান, মন্ত্রীর শ্যালকের মেয়ে প্রথম পরীক্ষা থেকে অনৈতিক সুবিধা চেয়ে আসছে। সুবিধা না দেয়ায় প্রতি
মন্ত্রীর প্রভাব খাটায় শ্যালক এনামুল হক।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আইন শৃংখলা রক্ষার্থে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। তেমন কিছু ঘটেনি পরিবেশ এখন শান্ত আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ ঘটনার পূনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার নিদের্শণা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। আমি এখনি খোজ খবর নিচ্ছি। এরকম ঘটে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতাকর্মী জানান, এনামুল হক প্রতি মন্ত্রীর প্রভাব দেখিয়ে নানা অনিয়ম চালিয়ে আসছে। এতে মন্ত্রী এবং সরকারের বদনাম হচ্ছে। মন্ত্রীর এ বিষয়ে সজাগ হওয়া উচিৎ।