কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন- এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে তুলে নিয়ে আসে জেলা প্রশাসকের মোবাইল কোর্ট। পরে রাত দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মাদক মামলায় এক বছরের কারাদন্ড দিয়ে রাতেই জেল হাজতে পাঠায়। সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পারিবারিক সুত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার নেতৃত্বে কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট আনসার সদস্যদের নিয়ে তার বাড়িতে যায়। একপর্যায়ে জোড় পুর্বক দরজা ভেঙে তার ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী সন্তানের সামনেই তাকে মারধর করে ধরে নিয়ে আসে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে এসে তার বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা রাখার অভিযোগে ১ বছরের কারাদন্ড দেয় ।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের স্ত্রী জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে খাওয়া শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ কে বা কারা দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে আমার স্বামী ফোনে স্বজনদের বিষয়টি জানান। এক পর্যায়ে দরজা ভেঙে তারা আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে উদ্যত হয়। পরে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মাহফুজুর ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ডিসি অফিসের লোকজন সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নিয়ে এসে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম তার ফেসবুক পেজে
“মুজিব বর্ষের প্রাক্কালে
কুড়িগ্রামে নিয়োগ বাণিজ্যের জনশ্রতি
চলছে!
ঘটনা কি সত্যি?”এরকম একটি পোষ্ট দেন। সেই পোষ্টে চাকুরী প্রাথর্ী ও সুধি মহল বিভিন্ন ধরনের মতামত প্রদান করেন। (জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।) এছাড়াও কিছুদিন আগে জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল ইসলাম এ বিষয়েও বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে রিন্টু বিকাশ চাকমা ও জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসে তার নামে মাদকের মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হলেও কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজার রহমান জানান, তার নামে ইতিপুর্বে মাদক সংক্রান্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দুলাল বোস জানান, আমার জানা মতে সাংবাদিক আরিফুল মদ-গাঁজা তো দুরের কথা কোন দিন সে একটি সিগারেটও স্পর্শ করেনি। বরং যারা ধুমপান করে তাদেরকে বিভিন্ন সময় তিরস্কার করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *