কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
সাংবাদিক নির্যাতনকারী কুড়িগ্রাম জেলা থেকে সদ্য প্রত্যাহারকৃত ডিসি সুলতানা পরভীনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখার কারণে চাকুরী হারালেন রংপুর অঞ্চলের জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া শিল্পী ও কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম শফি। চাকরীচ্যুত হওয়ার পরেও ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছিলেন না তিনি।
কিন্তু বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে গ্রেফতার করে রাতভর নির্যাতন ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড প্রদানসহ সারাদেশে সাংবাদিকদের হত্যা, গুম, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে শুরু হলে বিষয়টি নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন শফিকুল ইসলাম শফি। বিষয়টি নিয়ে শফিকুল ইসলাম শফি সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
এই শিক্ষক বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার গান ও সাংগঠনিক দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে ২০১৪ সালের আগস্টে তৎকালীন ডিসি হাবিবুর রহমান সংগীত ও চারুকলা শিক্ষক হিসেবে কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে চাকরি দিয়েছিলেন। দীর্ঘ আট বছর ধরে আমি সামান্য বেতনে সেখানে অতিথি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। কিন্তু বর্তমান ডিসি সুলতান পারভীনের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় গত বুধবার (১১ মার্চ) কোন কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত করেন।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের নভেম্বর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে জেলার দশটি স্কুলে হারমোনিয়াম ও তবলা কেনার জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। ওই বরাদ্দ পেয়ে ডিসি সুলতানা পারভীন নিম্নমানের হারমোনিয়াম ও তবলা ক্রয় করেন। যা ক্রয় কমিটির অন্য সদস্যদের জানা ছিল না। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুকে লেখালেখি করেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন ডিসি সুলতানা পারভীন।
সেই স্ট্যাটাস দেখে ডিসি তাকে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করাসহ ভয়ভীতি দেখান। এর কিছু দিন না যেতেই গত ১১ মার্চ তাকে কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে চাকরিচ্যুৎ করেন। শফির দাবি, ডিসি সুলতানা পারভীন নিজের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার ঢাকতে অন্যায়ভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করেছেন।
এব্যাপারে কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ মিলন বলেন, শফিকুল ইসলাম শফি আট বছর ধরে অতিথি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে কলেজে ফান্ড না থাকায় আপাতত তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময় অন্য কোথা থেকে ফান্ড পেলে আবার তাকে নিযোগ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি জানতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।