ঝালকাঠি প্রতিনিধি
নিজ ভুমিতে পরবাসী সেই মুক্তিযোদ্ধা অমল কান্তি দে’র ঠাঁই হলো আবাসনে। ১৯৬৬ সালের ছয়দফা থেকে স্বৈরশাসক এরশাদ আমল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৫৯টি মামলা হয়।বাধ্য হয়ে ১৯৮৪ সালে দেশ ছেড়ে চলে যান নিভৃতে। কিন্তু মাতৃভূমির টানে নিজ জেলা ঝালকাঠিতে আবার ফিরে আসেন ২০১৯ সালে। তখন একটি স্থানে তার ঠাঁই হলেও করোনা সংকটে সে আশ্রয়টুকো হারিয়ে গত তিনদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধার ঠাঁই হয় পার্কের বেঞ্চে। সেখানে কুকুর আর মানুষিক ভারসাম্যহীনের সাথে থাকতে হয় এই স্বাধীনতা সংগ্রামীকে। অমল চন্দ্র দে নামের এই মুক্তিযোদ্ধার বাবা প্রয়াত বীরেন দে ঝালকাঠি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক। অঢেল সম্পদ ও সম্পত্তি থাকলেও একাত্তরের নির্মমতায় সব হারিয়ে নি:শ্ব এই স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি এখন যেন নিজভূমে পরবাসী।

বিষয়টি নিয়ে মুক্তমনের সাংবাদিক সংগঠন ঝালকাঠি মিডিয়া ফোরামের সভাপতি মো. মনির হোসেন স্বাধীনতা সংগ্রামী অমল কান্তি দে’র পৌর পার্কে অবস্থানরত ২য় দিনের ছবিসহ একটি পোষ্ট দিলে মুক্তচিন্তার অনলাইন সংবাদপত্র ‘ঝালকাঠি সময়’ সম্পাদক পলাশ রায়ের নজরে আসে। আর তার পরই ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অনুরোধ করলে ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। অবশেষে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশ এবং আন্তরিকতায় আবাসন প্রকল্পের একটি ঘরে স্থায়ী ভাবে ঠাঁই মিলল এ মুক্তিযোদ্ধোর।

বুধবার রাতে জেলা প্রশাসক মো: জোহর আলী’র নির্দেশে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল ইসলাম পৌর পার্কে নিতে আসলে বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে থাকা মালামাল গাড়িতে উঠার জন্য কোন লোক ছিল না ঝালকাঠি মিডিয়া ফোরামের সভাপতি মোঃ মনির হোসেন নিজ হাতে মালামাল উঠিয়ে নিজে বাইক চালিয়ে চলে যান মুক্তিযোদ্ধার সাথে আবাসনে । আবাসনের রাস্তা খারাপ থাকায় এসি ল্যান্ডের গাড়ি থেকে মালামাল নামিয়ে অটোতে করে পৌঁছে দেন বরাদ্দকৃত ঘরে । সেই ঘরটি পরিষ্কার করে রাতে থাকার মত পরিবেশ তৈরি করে সকলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে চলে আসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অমলকান্তি দে কে সদর উপজেলার কিস্তাকাঠী আবাসনের বাইশঁ ব্রাকের ১২/১০ নাম্বার ব্রাকে স্থনান্তর করেন এসিল্যান্ড ভুমি জহিরুল ইসলাম।

স্বাধীনতা সংগ্রামী অমল কান্তি দে মুক্তমনের সাংবাদিক সংগঠনের সকল সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয় বলেন, তাদের এ মহতি উদ্যোগে নিজভূমে পরবাসী একজন মুক্তিযোদ্ধার স্থায়ী ভাবে ঠাঁই মিলল। সেই সাথে জেলা প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানায় অমল কান্তি দে।

উল্লেখ্য, দির্ঘ ১৭ মাস ঝালকাঠি শিশু পরিবারে অবস্থানরত স্বাধীনতা সংগ্রামী অমল কান্তি দে কে কর্তীপক্ষের নির্দেশে রবিবার (৩১ মে, ২০) চলে যেতে বলে। পরে তিনি আনুপায় হয়ে পার্কে অবস্থান নেয়, পরে সাংবাদিকদের অনুরোধে জেলা প্রশাসন তার আবাসনের ব্যাবস্থা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন