কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে চাঞ্চল্যকর শিশু সিয়াম হত্যার ঘটনা উন্মোচনের পর মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার অফিস হলরুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে গত ২০জুন সকালে ৫ বছরের শিশু সিয়াসের উপর বিকৃত লালসা চরিতার্থের পর তাকে গলা টিপে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। টানা ৬দিন অনুসন্ধানের পর ফুলবাড়ি থানা পুলিশ ঘাতক সিয়ামের চাচাতো ভাই কিশোর রাসেল বাবু রাকিবকে (১৫) হত্যার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ঘটনার পর থেকে ঘাতক রাসেল বাবু রাকিব অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। মেয়েলি স্বভাবের রাকিবকে অনেকেই উত্যক্ত করতো। এমনকি সিয়ামের বাবাও তাকে মেয়ে বলে রসিকতা করত। এনিয়ে ক্ষোভ ছিল রাকিবের। সে শোধ নেয়ার জন্য শিশু সিয়ামকে এর আগেও একবার বলাৎকার করেছিল। পরে তাকে এড়িয়েই চলত সিয়াম। ঘটনার দিন আম খাওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে বাড়ি থেকে ৪শ’ গজ দূরে প্রতিবেশী ছয়ফুলের পাট ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে জোড় করে সিয়ামের উপর বিকৃত লালসা চরিতার্থ করে। এ ঘটনা বাড়িতে জানিয়ে দিবে শুনে শিশু সিয়ামকে ঘাতক রাসেল বাবু দু’হাত দিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। পরে পাটের আঁশ গলায় পেচিয়ে রেখে বাড়িতে চলে যায়। ঘটনার ৬দিন পর ঘাতককে সনাক্ত করে পুলিশ। ঘাতক রাসেল বাবু একই ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের জহুরুল হকের পূত্র।
ফুলবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নবীউল হাসান কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খানের নির্দেশে গোপনে সোর্স নিয়োগ করে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখেন। পরে রাসেল বাবু ওরফে রাকিবের আচড়ণে সন্দেহ দেখা দেয়ায় তাকে ২৮জুন গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে অপরাধের কথা স্বীকার করে। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালত তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিশোর অপরাধী রাসেল বাবু ওরফে রাকিবকে শিশু সংশোধনাগারে রাখার আদেশ প্রদান করেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে যশোর শিশু সংশোধানাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২০জুন সকালে শিশু সিয়ামকে বাড়ি থেকে ৪শ’ গজ দূরে পাট ক্ষেতের ভিতরে গলায় পাটের আঁশ দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার বাবা একজন টাইলস মিস্ত্রি। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা রহস্য এক সপ্তাহের ভিতরে অনুসন্ধান চালিয়ে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *