রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) রুহুল্লাহ।
অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানি, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ওই তহশিলদারের বিরুদ্ধে। ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই তহশিলদারের নিজের করা আইন মানতে হয় ভূমিসেবা নিতে সাধারণ মানুষকে। কেউ এর প্রতিবাদ করলেই ওই ভূমি কর্মকর্তা স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্রকে লেলিয়ে দেন সেবা নিতে আসা লোকজনের ওপর।
বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে গণশুনানি হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস।
উপজেলা প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মো. রুহুল্লাহ শৌলমারী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকেই নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠে।
লিখিত অভিযোগে শৌলমারী ইউনিয়নের বাতারগ্রাম এলাকার কৃষক অফর উদ্দিন অভিযোগ করেন, জমির খাজনা বাবদ তার কাছ থেকে নগদ ৭ হাজার টাকা নিয়ে ৯৯০ টাকার একটি রশিদ হাতে ধরিয়ে দেন তহশিলদার রুহুল্লাহ।
একই এলাকার মৃত দুখু মাহমুদের ছেলে রফিয়াল হক বলেন, জমির খাজনা বাবদ ৩ হাজার টাকা নিলেও রশিদ দেন ১ হাজার টাকার এবং হোল্ডিং বাবদ দাবি করেন ৬০০ টাকা।
এদের মতো একই অভিযোগ ওই ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা বেশির ভাগ মানুষের। নাম খারিজের বেলায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি ১ হাজার ১৫০ টাকা হলেও অতিরিক্ত হিসেবে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন ওই তহশিলদার।
দাবিকৃত ঘুষের অর্থ দিতে অস্বীকার করলে নানা টালবাহানা করে জমির মালিকদের হয়রানি করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী উপজেলার বড়াইকান্দি বাজারে তহশিলদার রুহুল্লাহর অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে ওই তহশিলদারকে নিজ অফিসেই ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে অফিস থেকে কৌশলে পালিয়ে ওই যাত্রায় রক্ষা পান তহশিলদার।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রৌমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করা হবে। এ ব্যাপারে দ্রুতই দিন-তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলেও যোগ করেন ওই ভূমি কর্মকর্তা। অভিযোগের তদন্ত শেষেই নেয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা।