সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে চলতি আমন মৌসুমের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও এখানে ধানের গুদাম গুলো শূন্যই রয়ে গেছে।
ধানের স্থানীয় বাজারমূল্য থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম হওয়ায় সরকারি খাদ্যগুদামে কোনো কৃষকই ধান বিক্রি করেননি। সরকারি চুক্তিভুক্ত চাল সরবরাহকারী স্থানীয় মিলাররা তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই গুদামে চাল বিক্রি করেছেন।
উপজেলার সরকারি খাদ্যগুদাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬০ টন ও স্থানীয় মিলারদের কাছ থেকে চালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮৭ টন। ধান ও চাল সংগ্রহের মেয়াদ ছিল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরবর্তীতে ধান-চাল সংগ্রহের মেয়াদ ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহ করা হলেও মেয়াদের শেষ দিন পর্যন্ত কোনো কৃষকই এক ছটাক ধানও সরকারি খাদ্যগুদামে বিক্রি করেননি।
চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে এখানের ২২ মিলারের মধ্যে চাল দিতে আগ্রহী ১৫ মিলার চুক্তি করেছিলেন। অন্যান্য সাত মিলার এবারের মৌসুমে চাল দিতে অনীহা প্রকাশ করে চুক্তি করেননি। চুক্তিভুক্ত ওই মিলারদের কাছ থেকে ৯৪ টন চাল ৩৬ টাকা কেজি দরে সংগ্রহ করা হয়। আমন ধান ক্রয় মৌসুমে গত ১ নভেম্বর থেকে সরকারিভাবে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২০ জন কৃষকের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি তিন টন করে ধান সংগ্রহ করার কথা ছিল খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয় একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারিভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া ধানের দাম ২৬ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ ধান এক হাজার ৪০ টাকা। অথচ খোলাবাজারে ধান বিক্রি করলে পাওয়া যায় ১১০০ টাকার বেশি। যার অর্থ প্রতি মণ ধানের বাজারমূল্য ৬০ টাকারও বেশি। তাছাড়া সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিলে টাকা নিতে হয় ব্যাংক থেকে। এটি কৃষকদের জন্য অনেকটাই ঝামেলাপূর্ণ। এ কারণেই স্থানীয় কৃষকরা খাদ্যগুদামে এবার ধান বিক্রি করেননি।
উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, এবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থানীয় মিলারদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু ধানের মূল্য স্থানীয় হাটবাজারে বেশি হওয়ায় সরকারি গুদামে কোনো ধান বিক্রি করেননি কোনো কৃষক।