কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-

কুড়িগ্রামের উলিপুরে দলদলিয়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া আনসার ভিডিপি ক্লাবে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন নামে সমবায় সমিতি চালিয়ে যাচ্ছে। গত তিন বছর পর সমিতির যেখানে ইউপি আনসার ভিডিপির সদস্যদের থাকার কথা ছিল, সেখানে আনসার ভিডিপি অফিসের নামে কাজীপাড়া গ্রামে কোমিউনিটি ক্লিনিক এর সাথে বিভিন্ন নামে সমবায় সমিতির দীর্ঘ দিন ধরে এলাকাবাসীকে সদস্য করে সঞ্চয় জমা করা হয়। কিন্তু সমিতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে সদস্যদের কাছে কোন হিসাব নিকাশ না দেখিয়ে গত ১০ জানুয়ারি ২০২১ ইং থেকে বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করে আসতেছে, প্রতিস্ঠানের সভাপতি শামসুল আলম ভোলা(৫০) সেক্রেটারি, লিটন মিয়া (৩৬) এবং ক্যাশিয়ার, আব্দুল রোউফ (৪০) প্রতিস্ঠানের তিন জনের বিরুদ্ধে ৪ শত ৬০ জন সদস্যদের ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া আনসার ভিডিপি সমবায় সমিতির গ্রাহক সূত্রে জানা গেছে, সমিতিটি আনসার ভিডিপির নামে নিবন্ধন নং ৭৩ সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন পায়। পরে ২০১৫ সালে নিবন্ধন নং ৭৩ বাদ দিয়ে, অবইধ্য ভাবে নিবন্ধন নং ৭৮ করা হয়।

সমিতির সভাপতি শামসুল আলম ভোলা, সেক্রেটারি, লিটন মিয়া এবং ক্যাশিয়ার আব্দুল রোউফ গত বছর তিন বছর থেকেই লোভনীয় লভ্যাংশের আশ্বাস দিয়ে কাজীপাড়া গ্রামের মানুষের কাছ থেকে জামানত সংগ্রহ করে। গ্রাহকের সংখ্যা ৪শত ৬০ জন। তাঁদের লাভাংশ সহ জামানতের মোট পরিমাণ ৭০ লক্ষ্য টাকা। কিন্তু সমিতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যে পরিমাণ সদস্যরা টাকা পাওয়ার কথা ছিল, তা পায় না বলে সদস্যরা বিডিসি ক্রাইম নিউজের প্রতিনিধি কে জানান। তাই গ্রাহকেরা লভ্যাংশসহ জামানতের টাকার হিসাব নিকাশ চাইতে গেলে তাঁদের কোনো হিসাব না দিয়ে তালবাহানা করে সভাপতি শামসুল আলম ভোলা, লিটন মিয়া, এবং আব্দুল রোউফ।

সরেজমিনে গত শনিবার ৩ এপ্রিল ২০২১ ইং কাজীপাড়া গ্রামে সমিতির কার্যালয়ে দেখা যায়, তিন কক্ষের টিনের ঘরের ভিতরে সূর্যমুখী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নামে সাইনবোর্ড টাঙানো। কিন্তু কোনো লোকজন নেই। গ্রাহকরা বিডিসি ক্রাইম নিউজের প্রতিনিধি কে বলেন, ‘প্রতি ১ হাজারে ১ শত টাকা লাভাংশ সহ আশ্বাস দিয়েছিলেন সভাপতি ছামসুল আলম ভোলা। তাঁর আশ্বাস পেয়ে আমরা ওই সমিতিতে হিসাব খুলি। সমিতির মেয়াদ শেষ হলে কেউ ১১১৪০ টাকা পায়, কেউ আবার ১৪ হাজার টাকা করে পায়। সেই জন্য আমরা লভ্যাংশসহ জমা দেওয়া টাকার হিসাব চাইতে গেলে দেব-দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে আসিতেছে, ছামসুল আলম ভোলা, লিটন মিয়া, আব্দুল রোউফ।

একপর্যায়ে সভাপতি সদস্যদের কে কোনো টাকা হিসাব দিতে পারবেন না বলে দেন। সদস্যরা
এলাকার মাতবরদের শরণাপন্ন হয়ে, তাঁদের কাছে আমরা টাকা পরিশোধের জন্য দাবি করি। পরে সভাপতি, সেক্রেটারি এবং ক্যাশিয়ারের সাথে কথা বললে, তারা নানান তালভাহানা দেখিয়ে আসে।

সদস্য মামুন মিয়া, এবং বাবলু মিয়া বলেন, ‘আমি এই সমিতির শুরু থেকেই ছিলাম।
অধিক লাভের আশ্বাসে লোকজনদের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করা হয়েছে এবং আমি নিজেও ওই সমিতিতে একটি আমানত হিসাব খুলি। আমার ১৬ হাজার টাকা পাওনা।
টাকা চাইলে দিবো দিচ্ছি বলে নানান তালভাহানা দেখিয়ে আসে।

এবিষয়ে উপজেলার আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা জনাব মোঃ সোলায়মান হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৯০/৯১ সালে আনসার ভিডিপি ক্লাবের নিবন্ধন নং ৭৩ পায়। কিন্তু ঐ সময় কাজীপাড়া আনসার ভিডিপি ক্লাবে ২০ হাজার টাকা এবং পাঁচ বান্ডিল টিন অনুদান পায়। সেই সময় ভাল ভাবে সমিতির কর্যকলাপ চলছিল, এখন সদস্যদের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরে উলিপুর উপজেলা সমবায় সমিতির কর্মকর্তা জনাব মোঃ সাইফুল রহমান মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজীপাড়া আনসার ভিডিপি ক্লাবের সদস্যরা আমাকে অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *