কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের প্রস্তাবিত কচাকাটা উপজেলায় গরু ব্যবসায়ীর পদভারে ও গবাদিপশুর মলমূত্রে উপেক্ষিত হয়েছে বাংলা ও বাঙালির বিজয়স্তম্ভের সম্মান।
জাতীয় বিজয় দিবস উদযাপনে কচাকাটা জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির বাস্তবায়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সম্মান এবং তাদের স্মৃতিচারণে নির্মিত কচাকাটা কেন্দ্রীয় বিজয়স্তম্ভের পাদদেশটিকে ট্রাকে গরু তোলার সিড়ি হিসেবে ব্যবহার করছে গরু ব্যবসায়ীরা।

বিজয়স্তম্ভের এমন অসম্মানে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় হাট কমিটি,স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও গরুর ব্যবসায়ীদের অজ্ঞতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

সচেতন মহলের অভিমত-শত শত মানুষের সামনে প্রকাশ্যে ট্রাক লাগিয়ে,পায়ে মাড়িয়ে গরু তোলার কাজে বিজয় স্তম্ভের বেদী ব্যবহার এটা স্বাধীনতার বিজয়স্তম্ভের অবমাননা। সরেজমিনে জানা যায়,আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহায় কোরবানীকে সামনে রেখে কচাকাটা বাজার পশুর হাট কচাকাটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানান্তর করা হয়।

প্রতিদিন এই হাটে শতাধিক গরু বেচা কেনা হয়। দূর দূরান্তের ব্যবসায়ীরা ট্রাক যোগে গরু নিয়ে যায়। এসব ট্রাকে গরু তুলতে বিজয় স্তম্ভের উচু বেদীকে ব্যবহার করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় দোকানদাররা জানান, প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে ট্রাকে গরু তোলা হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় গরু নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রাকে গরু উঠান বল্লভের খাষ ইউনিয়নের গরু ব্যবসায়ী মোখলেসুর রহমান এবং কচাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান।

এসময় কচাকাটা জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্যরা বাঁধা দিলে কয়েকটি গরু তুলে ট্রাকটি সরিয়ে নেন তারা।

ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমান জানান, তার ১২টি এবং আতাউর রহমানের তিনটি গরু ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাকটি ভাড়া করা হয়েছে। ইটের গাথা এই স্থানটি উচু গরু তুলতে সুবিধা তাই ট্রাক এখানে লাগানো হয়েছে।

এই স্থানের অর্থ আমরা বুঝতে পারি নাই।
এ বিষয়ে আতাউর রহমান জানান, তিনি তিনটি গরু ঢাকায় তার আত্মীয়ের বাসায় পাঠাবেন বলে এই ট্রাকে দিতে এসেছেন। তিনি আসার আগেই ট্রাকটি বেদীতে লাগিয়ে গরু তোলার কাজ শুরু হয়েছে। আসলে এখানকার কেউ এই স্তম্ভের মর্ম বুঝতে পারেননি।

কচাকাটা জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির কোষাধ্যক্ষ মমিনুল ইসলাম জানান, বিজয়স্তম্ভের বেদী ব্যবহার করে ট্রাকে গরু উঠানো বিষয়টি হৃদয় বিদারক। সেখানে উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিরা থাকলেও কেউ নিষেধ করেনি। পরে সংবাদ পেয়ে আমরা কয়েকজন সেখানে গিয়ে তাদেরকে সতর্ক করে দেই এবং ট্রাকটি সরিয়ে দেই। পরে ব্যবসায়ীদের বেদীসহ পুরো চত্ত্বর পরিস্কার করে দিতে বলি।

কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুব আলম জানান, বিষয়টি শোনার পর হাট কমিটির সভাপতিকে অবহিত করা হয়েছে। পরবর্তিতে এরকম ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন