নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সের মেয়াদ কমানো হবে আত্মঘাতী উদ্যোগ। এ উদ্যোগ বাতিলসহ পলিটেকনিক শিক্ষকদের হয়রানিমূলক বদলির আদেশ প্রত্যাহার ও পেশাগত ৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ।
শনিবার আইডিইবি ভবনে সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযাদ্ধা এ কে এম আব্দুল মোতালেবের সভাপতিত্বে সংগঠনটির আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
এসময় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুছ আফ্রাদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান, বাংলাদশ সচিবালয় সাংবাদিক ফোরামের সহ-সভাপতি মোতাহার হোসেন।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স হ্রাসের আত্মঘাতী উদ্যোগ থেকে সরে এসে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ও শিক্ষার মানোন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে। এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান সাংবাদিক নেতারা।
তারা আরো বলেন, প্রকৌশল অঙ্গনকে উত্তপ্ত করে দেশের উন্নয়ন-উৎপাদন এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন ভিশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা মুখ্য ভূমিকা রাখছেন। তাই, তাদের বিরুদ্ধে যে কোন ধরণের ষড়যন্ত্র জাতীয় অগ্রগতিকে থামিয়ে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র।
সংগঠনটির সদস্য সচিব এটিএম গোলাম মোস্তফা বলেন, বিএনবিসি ও ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বিতর্কিত ধারা সংশোধন ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ন্যায্য পেশাগত দাবি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র শিক্ষক পেশাজীবী সংগ্রাম পরিষদ ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এসময় জাতির বৃহত্তর স্বার্থ বাস্তবায়নে নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও নির্দেশনা কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ৪ বছর থেকে হ্রাস করে ৩ বছরে রপান্তর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আত্মঘাতী উদ্যোগ। এছাড়াও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কার্ডে ২০২০ এ নির্মাণ কাজ জনগণকে জিম্মিসহ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অবমূল্যায়ন ও অধিকার হরণ করছে। প্রধানমন্ত্রীর ২০১৮ সালের নির্দেশনা ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশের আলোকে বিএনবিসি ২০২০ এর জনস্বার্থবিরোধী সংজ্ঞা ধারা-উপধারা সংশোধন করার দাবি জানান। এছাড়াও ইমারত বিধিমালা ২০০৮ সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করার আহ্বান জানানো হয়।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিশেষ ইনক্রিমেন্ট প্রদান, পদোন্নতির কোটা ৫০ ভাগ উন্নীতকরণ, সরকারি আধা সরকারি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পেট্রোবাংলা করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন কোম্পানিতে ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অনুপাত ১:৫ রেখে জনকল্যাণে অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন এবং জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রজ্ঞাপন জারি করার আহ্বান জানানো হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, বেসরকারি সেক্টরে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারকে বেতন নির্ধারণ ও সরকারি প্রণোদনা দিতে হবে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টিটিসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক স্বল্পতা, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও ওয়ার্কশপ সংকটসহ শিক্ষকদের পদোন্নতি ও প্রকল্পের শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন দিতে হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ভাতা বৃদ্ধিসহ ২৯টি ইমার্জিং টেকনোলজির বেকারদের এবং বেকার ডিপ্লোমা গ্রাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা করোনাকালীন সময়ে সংগ্রাম পরিষদের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অজুহাতে পলিটেকনিক শিক্ষকদের যেন হয়রানিমূলক বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সভায় মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ৭-১৪ আগস্ট পক্ষকালব্যাপী জাতীয় শোক দিবসের উপর আলোচনা, দুঃস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণসহ ৪ দফা দাবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শনপূর্বক আলাচনা অনুষ্ঠান আয়োজন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা অর্পণ ও জেলা পর্যায়ে একইভাবে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা অর্পণ, শোক র্যালী ও ৪ দফা দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন প্রদর্শনের কথা বলা হয়।
সংগঠনটির যুগ্ম সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান নয়নের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহবায়ক মাে. সিরাজুল ইসলাম, মােবারক হােসন, বীর মুক্তিযাদ্ধা মো. খবির হােসেন, শাহরিয়ার আলম, প্রমুখ।