লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটে স্ত্রীর পরকীয়ার বলি আব্দুল জলিলের মরদেহ ১১দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে । ঈদের দ্বিতীয় দিন রাতে পরকীয়া প্রেমিক গোলাম রব্বানী ও স্ত্রী মমিনা বেগম ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে জলিলকে। এ ঘটনায় আসামীরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার পর আজ রবিবার ১ লা আগস্ট জলিলের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
ঘটনা সুত্রে জানা গেছে, মৃত জলিল এবং পরকীয়া প্রেমিক পল্লী চিকিৎসক গোলাম রব্বানী বন্ধু ছিলেন। ঈদের দ্বিতীয় দিনে একসাথেই সময় কাটানোর পর বাসা যাওযার সময় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে জলিলকে বাড়ী পাঠিয়ে দেয়। ওইদিন গভীর রাতে পল্লী চিকিৎসক গোলাম রব্বানী কৌশলে জলিলকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তিনি বাড়ীতে এসে ঘুমিয়ে পড়ার সাথে সাথে তাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরদিন ভোরে স্বামীর মৃত্যু নিশিচ করে পরকীয়া প্রেমিক পল্লী চিকিৎসক গোলাম রব্বানী। জলিলে নাকে মুখে রক্ত আসতে দেখে তরিঘরি করে লাশ দাফন করে ফেলেন।
ঘটনার তিনদিনের কুলখানি অনুষ্ঠান শেষে জলিলের বড়ভাই আব্দুর রশিদ জলিলের স্ত্রী মমিনা কে তাদের বাড়ীতে যওয়ার কথা বললে তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে আর শ্বশুর বাড়ি যাবেন না। প্রয়োজনে আবার বিয়ে করবেন । এ কথা শোনার পর মৃত জলিলের বড়ভাই রশিদের সন্দেহ হয়। তাই পরেরদিন (২৫ জুলাই) জলিলকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে পুলিশ সুপার বরাবরে একটি অভিযোগ দেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামালের নেতৃত্বে সদর থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে তাদের ফোন কল যাচাই করে গত (২৭ জুলাই) মঙ্গলবার সকালে ৪জনকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রাথমিকভাবে তারা জলিলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। অপর দুজন হত্যার সাথে জড়িত না থাকায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
পরে তাদের দুজনকে আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাদের জবান বন্দি রেকর্ড করা হলে আদালত কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নিয়মানুযায়ী আজ বোববার সকাল ১০ টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদ আল সোহানের উপস্থিতিতে পৌরসভার সাপটানা কবরস্থান থেকে জলিলের লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামাল, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম, হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (সদর ফাড়ীর ইনচার্জ) মাহমুদুন্নবী, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মী সহ মামলার বাদী পক্ষের লোকজন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফরিদ আল সোহান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে জলিলের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।