কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

দেওয়ানি আদালতের নির্দেশে ডিক্রিকৃত নালিশি জমিতে সরেজমিন দখলের কাজে বাধা প্রদান করার অভিযোগে প্রেক্ষিতে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ অমান্য করায় কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রজ্জাক মিলনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । মঙ্গলবার ( ১৭ আগস্ট) সহকারী জজ আদালতের (চিলমারী) সহকারী জজ মো.রাকিবুল হক এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জিয়াউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জারিকৃত আদেশে আদালত জানায়, যথাযথভাবে নোটিশ জারি করা হলেও থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক মিলন স্বয়ং কিংবা নিযুক্তিয় কৌশলীর মাধ্যমে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে কোনও প্রকার কারণ দর্শাননি কিংবা কোনও প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি যা দন্ডবিধি ১৭৩/১৭৪/১৮৩/১৮৬/১৮৭/১৮৮ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৫ (১) (ক) (খ) ধারা অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশের অনুলিপি চিফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট, কুড়িগ্রাম বরাবর অবিলম্বে প্রেরণ করা হলো।

আদালত সূত্র জানায়, সহাকারী জজ আদালত,চিলমারী কর্তৃক একটি মামলায় (মোকাদ্দমা নং-অন্য ডিং ০১/২০২১) ডিক্রি জারি হলে আদালতের নির্দেশে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সালিশি জমির দখল বুঝে দিতে সরেজমিন চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নে যান আদালতের সিভিল কোর্ট কমিশনার মো. আখতারুজ্জামান। আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে ৩০ শতক জমির দখল বুঝে দিতে তিনি ওই জমিতে গেলে থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মিলন তার দলবলসহ ঘটনাস্থলে যান এবং কোর্ট কমিশনারকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে তার কাজে বাধা প্রদান করেন। এসময় চেয়ারম্যান তার (কোর্ট কমিশনার) সাথে থাকা ব্যাগ এবং মোটর সাইকেলের চাবি কেড়ে নেন এবং তাকে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় কোর্ট কমিশনার তার ব্যাগ ও মোটরসাইকেলের চাবি ফেরত পেলেও আদালতের আদেশ অনুযায়ী ডিক্রিকৃত নালিশি জমির দখল বুঝে দিতে ব্যর্থ হন। পরে তিনি ফিরে এসে বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতের নজরে আনেন। এরই প্রেক্ষিতে আদালত গত ২৮ জুন থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মিলনকে তলবের আদেশ দেন।

আদালত সূত্র আরও জানায়, নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানকে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেওয়া হলেও নোটিশ পাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান কিংবা তার নিযুক্ত আইনজীবী আদালতে হাজির হননি। যা আদালত অবমাননার শামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বেঞ্চ সহকারী জিয়াউর রহমান জানান, ইতোমধ্যে আদেশের অনুলিপি বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। অবিলম্বে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *