তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামের ধরলা নদীতে পানি আকর্ষিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুড়িগ্রামে তেমন বৃষ্টিপাত না হলেও উজানের ভারতে অস্বাভাবিক বৃষ্টি পাতের কারনে নদী অববাহিকায় এ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে বলছে । আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার রোপা আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত এখন পানির নীচে রয়েছে ।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক আফসার আলী জানান, ভরা বর্ষা মৌসমে বন্যা না হওয়ায় সেচ দিয়ে এবার জমিতে আমন লাগিয়েছিলাম। সেই আমন এখন পানির নীচে। শেষ সময়ে হঠাৎ করে ধরলার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ ক্ষতির মুখে পড়লাম। এই পানি যদি দ্রুত নেমে যায় তাহলে কিছুটা রেহাই হবে, আর যদি পানি আরো বেড়ে যায় তাহলে আমন চারা নষ্ট হয়ে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এমন কথা শোনালেন , ঐ গ্রামের আজিজুল, করিম,সুলতানসহ অনেকেই।
অন্যদিকে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও গত ২৪ ঘন্টায় তা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামের ধরলা সেতু পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তায় পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ধরলার পানি কমতে শুরু করবে বলে জানান তিনি। পানি বৃদ্ধির সাথে ভাঙ্গন কবলিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলানোর কাজ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।