লালমনিরহাট থেকে ফিরে মোঃ রফিকুল ইসলামঃ

রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় লালমনিরহাট সদরে ৫৯টি পাওয়ার থ্রেসার, ২টি ইউনোয়ার, ১৪টি পাওয়ার স্প্রেয়ার, ১৪টি হ্যান্ড স্প্রেয়ার, ১৪টি ফুট পাম্প, ১৪টি উইডার, ১৪টি রিপার, ১১ রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ৩টি গ্রেইন ময়েশ্চার মিটার বিতরণ করা হয়েছে। লালমনিরহাট সদরে দানা ফসল কৃষক দলের সংখ্যা ৫৬টি, সবজি ফসল কৃষক দলের সংখ্যা ১৪টি এবং ফল ফসল কৃষক দলের সংখ্যা ১৪টি রয়েছে। কৃষক দলের মাঝে ১১টি ইয়ানমার রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রতিটি রোপণ যন্ত্রের মূল্য প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান এসিআই মটরস থেকে কৃষকদের এই যন্ত্র পরিচিতি ও পরিচালনার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশনায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ আধুনিক কৃষিযন্ত্র প্রদর্শন ও ব্যবহার করে প্রদর্শনী ক্ষেতে ফসল উৎপাদন করে কৃষকদের অনুপ্রাণিত করছেন। সেই সাথে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় কমাতে বিভিন্ন প্রকল্প ও ভর্তুকির আওতায় উপজেলার কৃষকদের দেয়া হচ্ছে আধুনিক কৃষিযন্ত্র। চলতি রোপা আমন মৌসুমে লালমনিরহাট সদর উপজেলায় রোপা আমন মৌসুমে ইয়ানমার রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের সাহায্যে রোপা আমন চারা লাগানো হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে রোপা আমন চারা লাগানোর কারণে কৃষকদের সময় ও শ্রম ঘণ্টা কমে এসেছে। এতে করে কৃষকরা উপকৃত হয়েছে।

সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান এসিআই মটরস এর রংপুর রিজনের রিজওনাল ম্যানেজার সেলস্ মাহমুদ রশিদ জানায়, এসিআই মটরস্ সারাদেশের ন্যায় লালমনিরহাট সদরে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে কৃষি সেক্টরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে কাজ করছে। যেখানে ১ একর জমিতে প্রচলিত পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপন করতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হতো আর সময় লাগতো সারা দিন। কিন্তু আধুনিক ইয়ানমার রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহারে ২ ঘন্টায় ১ একর জমিতে ধানের চারা রোপন করা যায়।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা জানায়, প্রথমবারের মত যান্ত্রিকভাবে রাইস ট্রান্সপ্লান্ট যন্ত্রের সাহায্যে লালমনিরহাট সদর উপজেলায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে আমন ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে খরচ ও সময় কম লাগায় স্থানীয় কৃষকরা এ যন্ত্রের সাহায্যে চারা লাগানোয় আগ্রহ বাড়ছে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য আমরা কৃষকদের বিভিন্ন প্রকল্প ও ভর্তুকির আওতায় কৃষি যন্ত্র দিচ্ছি। কৃষিতে শ্রমিক নিভর্রতা কমিয়ে যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কম খরচে ফসল উৎপাদনে সাফল্য পেয়েছেন এখানকার কৃষকরা। একর প্রতি জ্বালানি খরচ ২ থেকে আড়াই লিটার। ইয়ানমার রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহারে চারা রোপন করলে লাইন সোজা হয়। চারা থেকে চারার দুরুত্ব নির্দিষ্ট থাকে ফলে পরবর্তীতে আগাছা নিংড়ানো, সার ও কীটনাশক ছিটানো ও এমনকি ধান কাটা সহজ হয়। কুশির সংখ্যাও অনেক বেশি হয়। ফলে অধিক খড় পাওয়া যায়।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শামীম আশরাফ জানায়, বর্তমান সরকার কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে কৃষি সেক্টরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার কারণে দেশে কৃষিতে সাফল্য এসেছে। দেশ অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি যান্ত্রিকিকরণের মাধ্যমে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করতে কৃষি সেক্টরে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *