কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
চরম দারিদ্র্যতা নিয়ে বসবাস করছেন দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। জেলার ৫৩ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ অতিদরিদ্র। এ জেলায় রোগ-ব্যাধিতে ভোগা মানুষও বেশি। রোগ বয়ে বেড়াচ্ছে কুড়িগ্রামের প্রায় ৫৭ শতাংশ মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) প্রকাশিত ‘এক্সট্রিম প্রভার্টি: দ্য চ্যালেঞ্জেস অব ইনক্লুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্র এ প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইডিএস-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো জুলফিকার আলী ও বদরুন নেসা আহমেদ। প্রতিবেদনে মূলত অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জেলা কুড়িগ্রামের সঙ্গে দারিদ্র্যের হার, রোগ-ব্যাধি সংক্রমণ হার, ভূমিহীনদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, কুড়িগ্রামে শতকরা ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ পরিবারের প্রধান নারীরা। সেখানে ভূমিহীন অবস্থায় রয়েছেন ৬০ শতাংশ মানুষ। দিনমজুর হিসেবে জীবনযাপন করছেন ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ বাসিন্দা। তবে জাতীয়ভাবে নারীপ্রধান পরিবার ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ, ভূমিহীন ৮ শতাংশ।

এতে জানানো হয়, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৭ কোটি ধরে গবেষণাটি করা হয়েছে। বর্তমানে মোট জনসংখ্যার মধ্যে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র। দেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে।
এদিকে, অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর তালিকায় কুড়িগ্রাম শীর্ষে থাকলে এ জেলার পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলা বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাদের তথ্যানুযায়ী, তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে বান্দরবান। সেখানে ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ অতিদরিদ্র। এছাড়া অতিদরিদ্র দিনাজপুরে ৪৫ শতাংশ, মাগুরায় ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ, জামালপুর ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জে অতিদরিদ্রের হার শূন্য শতাংশ। এছাড়া মাদারীপুরে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ, মুন্সিগঞ্জে ১ দশমিক ২ শতাংশ, ঢাকায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ, গাজীপুরে ১ দশমিক ৯ শতাংশ।

বিআইডিএস মহাপরিচালক বিনায়েক সেন বলেন, ‘২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার যা ছিল, ২০২১ এর জানুয়ারিতে একই আছে। ২০১৬ সালে পর দারিদ্র্যের হার কমেছিল। কিন্তু করোনা মহামারির ফলে এটা বেড়ে গিয়েছিল। কোভিড পরবর্তীতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালে যা ছিল, ২০২১ সালের জানুয়ারিতেও একই আছে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, হোসেন জিল্লুর রহমান, বিনায়েক সেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *