রফিকুল হায়দার
তিস্তা নদীর চরে,
জনৈক বন্ধু পাখী শিকারে সঙ্গে লইলো মোরে;
চোরের মত পা টিপিটিপি শিকারের সন্ধানে,
চলিয়াছি দোহে সামনের দিকে নদীর কোলের পানে;
হেরিনু হাঁসের দলে,
খেলায় মত্ত জলে,
হঠাৎ মোদেরে হেরিয়া পালালো উড়িয়া প্রানের ডরে,
গেল হাঁস দল! আফসোস হ’ল দু’জনার অন্তরে;
কোলের গাঁয়ের আঁকা বাঁকা সোজাই নদীর দিকে,
চলিতে হেরিনু জোড়া চখাচখি সুমুখে নদীর বাঁকে;
শিকারী বন্দুক তুলি,
চখিরে করিল গুলি,
চখা উড়াইল আকাশের পানে, চখি নাই দেখে ফিরে,
দুপাখা প্রসারি প্রানহীন দেহে লুটায়ে ভূমির পরে;
বুক ফাটা চিৎকারে,
আকুলি ব্যাকুলি ফিরে,
ঝাঁপিয়া পড়িল চখির বুকেতে বাঁধিতে বাহুর ডোরে,
দ্বিতীয় ফায়ারে সুযোগে শিকারী চখার জীবন হরে;
দু’কান দু’হাতে ধরি,
যতদিন নাহি মরি,
তওবা করিনু আর নাহি যাবো পাখী শিকারীর সাথে,
পাষন্ড এরা, দয়া-মায়া, প্রেম নেই ইহাদের চিত্তে;
ফিরি আনু যবে ঘরে,
বউ শুধালো মোরে,
শিকার করতে গিয়েছিলে তুমি হাতে কিছু নাই একি!
কথা শেষ না হতে বাড়ীর সকলি করে শুধু দেখাদেখি;
চোখে এসেছিল জল,
বেঁধে গেলো কোলাহল,
পাখী পাওনাই দুঃখ কিসের আবার শিকারে যাবে,
দেখিবে একদিন সত্যিই তুমি একজোড়া পাখী পাবে;
বউয়ের কথা শুনি,
বুক হলো মরুভুমি,
যা বলিছো, আর কখনো শুধাবে না মোরে কভু,
জীবনের তরে বাদ দিয়েছি, মাফ করো তুমি প্রভু।।