কবিঃ রফিকুল হায়দার

তোমাকে দেখেছি শীতের হিমেল
বুড়ো দাদুর গায়ের চাদরে
তোমাকে দেখেছি এইতো সেদিন
কৃষকের গামছার ভেজা ঘামে
তেমাকে দেখেছি ঘোর অমাবস্যায়
মা কালীর উল্লসিত দুই বাহুতে
তোমাকে দেখেছি জোৎস্না রাতে
বন্ধুকে নিয়ে কাঠের পিড়িতে
তোমাকে দেখেছি মাদুর জড়ানো
হাসি ভরা মুখে ঠাকুরের পাশে
তোমাকে দেখেছি আমের বাগানে
বুড়ো দাদুটির সুঠাম বুকে
তোমাকে দেখেছি পদ্মার জলে
মাঝিদের সাথে পিয়াস মেটাতে
তোমাকে দেখেছি হিমালয় বুকে
মানুষের ভীড়ে দোকান সাজাতে
তোমাকে দেখেছি গঙ্গা সীমান্তে
রাইফৈল হাতে দেশ বাঁচাতে
তোমাকে দেখেছি খড় কুটো নিয়ে
দাদুর লাশের চিতা সাজাতে
তোমাকে দেখেছি ফুলের বাগানে
মধু পান রত ভ্রমরার সাথে
তোমাকে দেখেছি অবলা নারীদের
সবল করতে সুধা ঢেলে দিতে
তোমাকে দেখেছি বেহুলার সাজে
নিরুদ্দেশের ভেলা ভাসাতে
তোমাকে দেখেছি কবিদের মাঝে
নতুন নতুন শব্দ মিশাতে
তোমাকে দেখেছি পাশের ঘরেতে
রং চং মেখে বাইরে যেতে
তোমাকে দেখেছি সেই গাঁয়ের বধূ রূপে,
কলসি কাঁখে পানি আনতে নদীর ঘাটে
তোমাকে দেখেছি মৃত্যুর বোঝাপড়ায়
তোমাকে দেখেছি প্রেম আর পরাজয়ে.
তোমাকে দেখেছি-নিঃশ্বব্দ নির্ঝরে-
তোমাকে দেখেছি-কোজাগরী প্রান্তরে,
তোমাকে দেখেছি-হেমন্ত সম্ভারে।
তোমাকে দেখেছি-সতৃষিত দু’চোখে,
তোমাকে দেখেছি-নীল সাগরের ওপারে
তোমাকে দেখেছি লাজরাঙা সেই বধূঁয়ার নীলাভ আলোর বলয়ে।
তোমায় কোথায় দেখিনি’ বলোতো-!
তোমাকে দেখেছি আমারই সমস্ত স্নায়ুতে;
তোমাকে দেখেছি আমার বুকেতে নম্র-মোম শিখাটি জ্বালাতে
তোমাকে দেখেছি রসের হাড়িতে রসালো হয়ে চিমটি কাটতে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন