কেউ কি ওর বন্ধু হবে?
কবি-নাজমুল হুদা পারভেজ
লেখার তারিখঃ ১৯ ডিসেম্বর’২১ইং
সময়ঃ ১১টা ২৭ মিনিট।

তোমার চোখের গভীরতা আছে?
আলোক রশ্মির মতো ভীষণ তির্যক-
গতি ও প্রখরতা সম্পন্ন শার্দূল ?
টিকটিকি যেমন চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে-
আসামিকে খুঁজে বের করে তেমন।

তেমন একজোড়া চোখ দিয়ে-
একটি বটবৃক্ষের প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে খুঁজে দেখ,
দেখতে পাবে, প্রাচীন বটগাছের –
হৃদপিন্ডের মূল, শিকড়, উপ- শিকড় সব-
ছিঁড়ে গেছে একটি -একটি করে।
কষ্ট ছিল ভীষণ- জল কষ্ট সেখানে,
বিশ্বাসের বারিতে লবণাক্ততা ছিল, মিষ্টতা ছিল না বলেই।

জীবনের জন্য জীবন, ভালোবাসার জন্য ভালোবাসা
কোনটাই ছিল না বলে, হৃদয়ে পরিবেশের বিপন্নতা ।
বট বৃক্ষের নীচে নাকি অনেকেই আশ্রয় নেয়,
বন্ধুত্বের প্রতিশ্রুতিতে অনেকেই এসেছিল সেই বৃক্ষটার তলে
প্রথমে বৃক্ষের পাতা ছিঁড়ে সেই পাতার উপর বসেছিল
দেহ-মনের অবসাদ দূর করেছে, নির্মল বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করে।
যাবার কালে কৃত্রিম বন্ধুটি ওর দেহ ক্ষতবিক্ষত করে গেছে
অকারণে ক্ষতের চিহ্ন রেখে গেছে তার শরীরের সর্বত্র।
বটবৃক্ষটাই এখন বিপন্ন, ও আশ্রয় নেবে কোন গাছের তলে?

বটবৃক্ষটা চিৎকার করে বন্ধুত্বের বিশুদ্ধ জল চেয়েছে
বিশ্বস্ততার বিশুদ্ধ জল, কেউ শোনেনি ওর বাঁচার আকুতি।
কেউ এগিয়ে এসে ঢেলে দেয়নি ওর শিকড়ে-
স্বার্থহীন বন্ধুত্বের অর্ঘ্য, তাইতো নিঃসঙ্গতার অতলে-
মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করেছে, ছিঁড়েছে মূল, ছিঁড়েছে শিকড়।
ওর কষ্টের বোবা কান্না বলতে পারেনি প্রকৃতির নির্মলতার কাছেও।
প্রকৃতি যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সকলের মতোই।

এখন বটবৃক্ষটি মৃত্যু শয্যায়,
উপড়ে পড়তে পারে যে কোন মর্হূতে। ওকে বাঁচাতে হলে-
নির্মল এবং স্বার্থহীন বন্ধুত্বের জল ঢালতে হবে ওর শিকড়ে।
তবেই বৃক্ষটি বাঁচবে, নতুন করে মাটিতে ছড়াবে শিকড়, উপ-শিকড়
ডালে গজাবে সবুজ পাতা, সোজা হয়ে দাঁড়াবে আবারও।
কেউ কি নেই? স্বার্থহীনতার খোলস থেকে বেরিয়ে আসার?
কেউ কি ওর বন্ধু হবে?
কেউ কি নেই ? বিশ্বস্ত বন্ধুত্বের সুপেয় জল ঢেলে ওকে বাঁচাবার?
নাকি সকলের চোখের সামনে বটবৃক্ষটা-
সৃজনশীল সৃষ্টিশীলতা হারিয়ে সমূলে মাটি থেকে উপড়ে পরবে চিরতরে?
==========

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *