কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম, অনেকে বলে মঙ্গা পিড়ীত জেলা। উক্ত জেলার ভূরুঙ্গামারীতে চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ছাড়িয়ে গেছে গম চাষের নির্ধারীত লক্ষ্যমাত্রাও। দিগন্তজোড়া মাঠে সবুজের সমারোহ শেষে ফালগুনী বাতাসে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ঢেউ খেলছে গমের সবুজ শীষ। আর এতে লাভের আশায় স্বপ্ন বুনছেন ভূরুঙ্গামারীর কৃষক। গম কেটে নিয়ে পাট চাষের সুযোগ থাকায় এবং বর্তমানে পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা এখন গম চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গমের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের জনপ্রতি ২০ কেজি উন্নত জাতের গমবীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চাষিদের কৃষক দল গঠন, নতুন জাতের গমের প্রদর্শনী প্লট স্থাপন, আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ, সুষম সারের ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান ও বালাই দমন এবং হাইব্রিড জাতের বীজ সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মতো কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ফলে গম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।

উপজেলার গছিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, গম চাষে খরচ কম হয়। ভালো দাম ও ফলনের আশায় দুই বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। গমের কোনো কিছুই ফেলতে হয় না। গম বিক্রির পর গমের আটি বিক্রি করেও টাকা আসে।

ভূরুঙ্গামারী পাথরডুবি ইউনিয়নের মইদাম গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম জানান, উঁচু জমিতে গম ভালো হয়। গম গাছে রোগবালাই কম হয়। সেচসহ অন্যান্য খরচ কম লাগে। চার বিঘা জমিতে গম বুনেছেন। গম কেটে ওই জমিতে পাট চাষ করবেন তিনি। প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না হলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় গম চাষের খরচ কম। দাম ভালো পাওয়ায় গম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *