মৃধা বেলাল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সংস্কারের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আনুমানিক ৫’শ বছরের পুরানো প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নির্দশন পটুয়াখালীর র্মিজাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ। সাড়ে ৫’শ বছর পূর্বে নির্মিত ঐতিহাসিক এ মসজিদটি মুসলিম স্থাপত্য ও ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মসজিদটির সৌর্ন্দয ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

জানা গেছে, ইলিয়াছ শাহী বংশের রুকনদ্দিন বরবক শাহের শাসনামলে ১৪৬৫ সালে নির্মিত হয় ঐতিহাসিক শাহী মসজিদ। উজিউল খান নামে এক মিস্ত্রী মসজিদটির নির্মাণে কাজ করেন। মসজিদে তিনটি দৃষ্টি নন্দন কারুকার্যে খচিত মেহরব, পূর্বদিকে তিনটি খিলান পথ এবং ছয়টি আট কোনা মিনার সদৃশ পিলার রয়েছে। বিশাল একটি গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি কোন রড-সিমেন্ট ছাড়াই চুন-সুরকি ও পোড়ামাটির ফলক দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের ভিতর দিকে রয়েছে নানান কারুর্কায খচিত মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বর্তমানে দরজা-জানালা ও পিলারগুলোর অস্তিত্ব ধ্বংসের শেষ পর্যায়।

মসজিদ-সংলগ্ন একটি বড় দিঘি রয়েছে মুসল্লি­রা সেখানে ওজু ও গোসল করেন। মসজিদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন পরগনার ইয়াকিন শাহ ও কালাশাহ। মসজিদটি দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে এ অঞ্চলে মুসলিম শাসনের ইতিহাস, মুসলমানদের অবদান ও ঐতিহাসিক নির্দশন আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সরকার নজর দেবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দা মো: রুহুল জানান, এখানে অনেক দূর থেকে প্রায় মানুষ আসে এই মসজিদটি দেখতে। আবার অনেকে এখানে নামাজ আদায় করার জন্যও দূর দূরান্ত থেকে আসেন। তবে মসজিদটি এখন অনেকটাই ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে। এটি রক্ষা করতে পারলে এখানে মানুষের আসা যাওয়া আরো বাড়বে।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান মো: আবুবকর সিদ্দিকী জানান, র্ধমীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের জন্য উপজেলা পরিষদে কোন বরাদ্দ নেই। মসজিদটি সংরক্ষণে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে আরো যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন জানান, পটুয়াখালী একটি পর্যটন এলাকা। এখানে কুয়াকাটার পাশাপাশি ইতিহাসের সাথে জড়িত অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। আমরা এসব সংস্কৃতি ধরে রাখতে ও পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য কিছুদিন আগে জেলার বিভিন্ন স্থাপনা সংস্করণের জন্য সংশ্লিষ্ঠদের সাথে মিটিং করেছি। এই ধরনের স্থাপনাগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণে আমরা খুব শিগগিরই পদক্ষেপ নেবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *