রফিকুল হায়দার,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে এলজিইডির নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কোমলমতি শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত অভিভাবকরা।
১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ডাকুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ কাজে চরম অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা।বিক্ষোভে উত্তেজিত এলাকাবাসী “দুর্নীতির কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও” এলজিইডির কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও” সহ নানা স্লোগান দেয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪/০৭/২০২১ইং তারিখে কুড়িগ্রাম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র আওতায় ৭৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বরাদ্দে নির্মাণ এলাকায় সিটিজেন চার্টার না টাঙিয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট ডাকুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু করে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খায়রুল এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠান। উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের বেজ ঢালাইয়ে ব্যাপক অনিয়ম করে নিম্নমানের সিমেন্ট, দ্বিতীয় শ্রেণীর ইট, খোয়া, মাটি মিশ্রিত বালু এবং নিয়ম বহির্ভূত রড ব্যবহার করে। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। কুড়িগ্রাম এলজিইডিতে প্রভাব বিস্তারকারী নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক সানাউল কবির লেলিন এলজিইডির প্রথম সারির জনৈক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে মেঝে ঢালাইসহ অন্যান্য কাজ অনিয়মের মধ্যদিয়ে চালিয়ে যান। এরই এক পর্যায়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় তলার পূর্বদিকের দেয়াল নির্মাণের ৬ ঘন্টা পর দেয়ালটি ধ্বসে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আবারো নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের ব্যাপারে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিক অভিযোগ করলেও নীরব ভূমিকা পালন করে কর্তৃপক্ষ।
আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় এলজিইডি এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছে স্থানীয়রা। অবিলম্বে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
এলাকার আলাউদ্দিন, আহাম্মদ আলী, জাকির হোসেন জানান, এখন-ই অনিয়ম বন্ধ করতে না পারলে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ বাস্তবায়ন-ই হতে পারে স্কুলে আসা কোমলমতি শিশুদের জীবননাশের কারণ। তাই অনিয়ম বন্ধের জোরালো দাবি তাদের।
নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী সানাউল কবির লেলিনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী নিশাদ জামানকে কাজে অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করলে, তিনি দেয়াল ধ্বসের বিষয়টি অবহিত নন মর্মে জানান এবং বলেন এলাকাবাসী অভিযোগ দেয়নি। এইমাত্র শুনলাম। আমি ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করতে যাচ্ছি।
কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জানান, কাজে অনিয়মের সুযোগ নাই। ঠিকাদার কিংবা উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অনিয়ম করে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।