লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
লালমনিরহাটে এক জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের কিন্ডারগার্টেন ভিত্তিক হামিউস সুন্নাত মডেল মাদারাসা খোলা রাখা, শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, শিক্ষার্থীকে মারপিট, বই বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ নিষিদ্ধ সংগঠনের জড়িত থাকায় জেলা প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ২০২৩ সাল থেকে দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাপ্তাহিক দুদিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে চলমান বিদ্যুৎ সংকটে অন্যান্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিসের কার্যসূচিতে পরিবর্তনের অংশ হিসেবে সরকারি প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান আ’লীগ সরকারের সেই নির্দেশণা মানেন না লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের পশ্চিম আমবাড়ী গ্রামের ভিতরে গড়ে উঠা “হামিউস সুন্নাত মডেল মাদারাসা”। মাদারাসাটির প্রধান শিক্ষক জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত তার কিন্ডারগার্টন ভিত্তিক মাদারাসাটি খোলা রাখছেন। প্রধান শিক্ষক ও জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগ সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাদারাসাটি খোলা রাখার এমন খবরের ভিত্তিতে (১১ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় সরেজমিনে মাদরাসা খোলা রাখার ভিডিও ধারণ ও শিক্ষার্থীকে মারপিটের তথ্য জানতে গেলে সাংবাদিক-এর উপর চড়াও হন। চড়াও হওয়া সেই প্রধান শিক্ষক ও জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম সহ তার অন্যতম সহযোগী হারাটী ইউনিয়নের ঢাকনাই গ্রামের নুরের পূত্র ও ৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ওরুফে (টাকলু)।
ওই সময় সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে বাঁধা প্রদান সহ মাদরাসা প্রবেশে নিষেধ করেন।
অভিভাবক হাসিনা বেগম, আর্জিনা বেগম ও আন্জু জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে সরকারি নতুন বই প্রদানে অতিরিক্ত ২০০ টাকা বেশি নিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম। সরকারি নতুন বইয়ের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় এ মাদরাসা ছেড়ে চলে গেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তাছাড়াও উক্ত প্রতিষ্টানের শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, শিক্ষার্থীকে মারপিট, অর্থ লোপাট সহ নিষিদ্ধ সংগঠনের জড়িত থাকায় জেলা প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
হামিউস সুন্নাত মডেল মাদারাসার প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি বইয়ের টাকা নেয়নি। সেশন ফি নিয়েছি। এটি প্রাইভেট প্রতিষ্টান। শনিবার ক্লাস নয়, কোচিং করা হচ্ছে। এখানে কারও কিছু করার নেই।
হামিউস সুন্নাত মডেল মাদারাসার সভাপতি ও হারাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক খন্দকার রানা বলেন, আমি নামমাত্র ৪ মাসের জন্য ওই মাদরাসার সভাপতি ছিলাম। কারণ, প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর সহ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগে এলাকাবাসীর সাথে প্রায় দ্বন্দ্ব লেগে ছিল। সেই দ্বন্দ্ব নিরসন এবং একটি বৈধ কমিটি করার জন্য আমাকে মৌখিক ভাবে সভাপতি করা হয়েছিল। কোন কাগজ কলমে নয়। তাছাড়া জামায়াত ও বিএনপিতে ভরা এমন মাদরাসার সভাপতি হওয়ায় কোন ইচ্ছাই আমার নেই।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনোয়ারুল হক বলেন, সরকারি কার্যসূচির বাহিরে কোন শিক্ষা প্রতিষ্টান শনিবার খোলা থাকার অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।