মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ২৮ মন ওজনের বিশাল আকৃতির ফিজিয়ান জাতের এক গরু। রং কালো আর গায়ে গতরে বড় হওয়ায় মালিক খুশি হয়ে নাম দিয়েছে ‘কালা পাহাড়’। মালিকের আশা এবার কোরবানির পশুর হাট কাঁপাবে তার ‘কালা পাহাড়’ নামে গরুটি। বিশালকার এ গরুটি নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে মাতামাতি। বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা দেখতে আসছেন, করছেন হাকডাক। তবে গরুর মালিক এখনই এই কালা পাহাড় নামে খ্যাত গরুটি ছাড়ছেন না। আশায় আছেন দাম ভালো পেলে তবেই ‘কালা পাহাড়’ তুলে দেবেন ক্রেতার হাতে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুবুলিয়া গ্রামের নিয়ামত্যুল্লাহ শাহ্ এর খামারে গিয়ে দেখা মেলে এই কালা পাহাড়ের। ইটের দেয়াল আর টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরের এক পাশে ছিল বিশাল গরুটি। শরীরে কালোর প্রভাব বেশি তাই নাম কালা পাহাড়। অবশ্য গরুটির চার পা সাদা। মাথার ওপর সব সময় ৩টি বৈদ্যুতিক ফ্যান চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রচন্ড রোদ ও তাপ থাকায় গরুটিকে দিনের বেলায় ৬ হতে ৭ বার গোসল করানো হয়। গরুটির মাথার উপর সব সময় ৩ টি ফ্যান চলে। দেখা শুনার জন্য একজন কর্মচারী রয়েছে। তবে মালিক নিয়ামত্যুল্লাহ নিজেও যত্ন নেন এই কালা পাহাড়ের।

খামারে গরু কিনতে আসা গরু ব্যবসায়ী আঃ মালেক জানান, কালা পাহাড় নামে গরুটির ওজন প্রায় ২৮ মণ হবে। তিনি গরুটির দাম ১০ লাখ টাকা বলেছেন। তবে মালিক দিতে রাজি হয় নি।

গরু খামারী নিয়ামত্যুল্লাহ শাহ বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি প্রায় ৬ বছর ধরে গরু পালন করে আসছি। অনেক দিনের স্বপ্ন বড় গরু প্রস্তুত করব। এবার আমার সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। কোরবানি ঈদ সমনে রেখে ভালো দামে বিক্রির আশা করছি। অনেক গরু ব্যবসায়ী গরুটি দেখতে আসেন। ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। কিন্তু দামে পছন্দ হয় না। খামারে বিক্রি করতে না পারলে হাটে তুলব। বর্তমান গরুটি দৈনিক হাজার টাকার গো-খাদ্য খায়। গরুটির কথা শুনে অনেকে দেখতেও আসছেন।

গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, গরুর খাবারের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেক খামারি ছেড়েছেন এই পেশা। তারপরও আমাদের এলাকায় খামারি নিয়ামত্যুল্লাহ বড় আকারের গরু পালন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন। তিনি ভালো দাম পেলে অনেকেই কোরবানির বড় গরু-ছাগল পালনে আগ্রহী হবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে অনেকেই আগ্রহী হন না। তবে নিয়ামত্যুল্লাহ শাহ সফল হয়েছে। গরুটির বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি এবং গরুটিকে যাতে কোনো ওষুধ প্রয়োগ না করা হয় সে জন্য যোগাযোগ করেছি। গরুটি পালনে তাঁকে নানা পরামর্শ দিয়েছি। ভবিষ্যতে এ রকম গরু যদি কেউ পালন করতে চান প্রাণীসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *