ঢাকা অফিসঃ

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ করা নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)নিয়ে খুব বেশী আশার আলো দেখছে না জাতি অভিমত প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাপ’র আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়াটি ব্যক্তিগত বিবেচনা ও পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে কোনো সংস্থা গঠিত হলে তার কাজকর্ম সম্পর্কে আগাম মূল্যায়ন করা দুষ্কর। তারা বলেন, ১৯৫৭ সালে ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানীদের উদ্দেশ্যে ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারনের মধ্য দিয়েই মওলানা ভাসানী বাঙ্গালীকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের ৬০তম বার্ষিকী স্মরণে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় নগর আহ্বায়ক সৈয়দ শাহজাহান সাজু’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, আলোচনায় অংশগ্রহন করেন গণতান্ত্রিক ঐক্যের আহ্বায়ক কমরেড রফিকুল ইসলাম, ন্যাপ সম্পাদক মোঃ কামাল ভুইয়া, নগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুননবী ডাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সদস্য আবদুল্লাহ আল কাউছারী, জাতীয় ছাত্র কেন্দ্রের সমন্বয়কারী সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানী তাঁর ভাষনের এক পর্যায়ে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁর সুপুরিচিত ও সুবিখ্যাত ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারন করেন। ঐ ‘আসসালামু আলাইকুম’-এর তাৎপর্য্য উপস্থিত শ্রোতা যাদের মতে, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতার প্রথম স্পষ্ট দাবী এবং তার জন্যে প্রয়োজনীয় সংগ্রাম ও ত্যাগের সংকল্প ঐ ‘আসসালামু আলাইকুম’ ধ্বনীর মাধ্যমে ঘোষিত হয়েছিল। তিনি বলেন, কাগমারী সম্মেলনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যে গুরুত্বপূর্ণ ও জ্বালাময়ী বক্তব্য রেখেছিলেন তা আজো আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র রক্ষার সংগ্রামে এবং সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রেরনা যোগায়।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন জাতিকে খুব বেশী আশার আলো দেখাতে পারবে বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে না। সামনে গণতন্ত্রের জন্য আরো বেশী দুঃসময় আসছে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন তিনি।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া আরো বলেছেন, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মসূচীর আয়োজন করেছিলেন, এর মধ্যে তাঁর অবিস্মরণীয় কীর্তি এবং উপ-মহাদেশের তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আজকের বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হচ্ছে ১৯৫৭ সালের ‘কাগমারী সম্মেলন’। উপ-মহাদেশ ও পূর্ব বাংলা তথা আজকের বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর তাৎপর্য অনাগতকালের গবেষকদের কাছে স্বীকৃত। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমেই তৎকারীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ব শাসন ও স্বাধীকার আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এ অঞ্চলের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন করতে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছিল।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শাহজাহান সাজু বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন গড়ে তুলতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যে অবদান রেখেছেন-যে সম্মানি তিনি প্রাপ্য ছিলেন স্বাধীনতার ৪৬ বছরের সরকারগুলো তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। আমাদের দেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রয়োজনে মওলানা ভাসানীকে ব্যবহার করলেও প্রকৃত অর্থে তাকে তাঁর যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার কোন কর্মসূচীই গ্রহন করেনি। নিরপেক্ষ চিন্তায় অবশ্যই তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন