মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে উত্তর নওয়াবশ এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগি হিসেবে যারা সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করে তারা এখনও রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি পায়নি। ধরলা নদীর তীরবর্তী তৎকালীন সময়ে মতিয়ার মেম্বারের বাড়ী মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প থাকায় পাঁচগাছী ইউনিয়নের পানাতি পাড়া এলাকার মৃত কদম উল্যা শেখ এর পুত্র আব্দুল আজিম (৭৩), মৃত জোনাব আলীর পুত্র নুর হোসেন (৬২) উত্তর নওয়াবশ এলাকার মৃত কেরামত উল্যা ব্যাপারীর পুত্র দবির উদ্দিন (৭৪), মৃত আন্দারু শেখ এর পুত্র ফুলবর আলী (৭২) মৃত মতিয়ার রহমান এর পুত্র মমতাজ আলী (৭৬), মৃত সেকেন্দার আলী’র পুত্র আইয়ুব আলী (৬৭) ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার একতা পাড়া এলাকার মৃত টেপরা মামুদ এর পুত্র জোবেদ আলী (৭৯) মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগি হিসেবে অংশ নেয়। মতিয়ার মেম্বারের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প পাহাড়া দেয়া সহ মুক্তিযোদ্ধাদের গোয়েন্দা হিসেবে সহযোগিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে খোঁজ-খবর এনে দিত। ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সহযোগিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে খাবার জোগার সহ রান্নার কাজ করত। এ কারণে সরাসরি অস্ত্র নিয়ে সহযোগিরা যুদ্ধে অংশ না নিলেও এবং ভারতে গিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে অনেকেই ব্যর্থ হয়। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় সহযোগিদের নাম না থাকলেও রাষ্ট্রীয় ভাতা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সহযোগিদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করে।
যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম জানায়, পাঁচগাছী ইউনিয়নে নদী বিধৌত এলাকায় মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কাচিচর গ্রামে পাকবাহিনীর সদস্যরা ঢুকে দু’নারীর সন্ধান পায়। পাক হায়নারা ঐ দু’নারীকে ধরার জন্য ধাওয়া করে। এ সময় পাক হায়নাদের ধাওয়া খেয়ে ঐ দু’নারী পরিজন ও পাকরী বিবি তাদের ইজ্জত বাচানোর জন্য শিশু সন্তান আফজাল (৭) কে নিয়ে দৌড়ে পালায় এবং নদীর তীরে শিশু সন্তান আফজালকে রেখে নদীতে ঝাপ দিয়ে জীবন বির্সজন দেয়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে কাচিচর এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক ও ইছব আলী নৌকা করে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে নিয়ে আসে। মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প কেন্দ্রীক এরকম অসংখ্য মর্মান্তিক ঘটনা রয়েছে। যুদ্ধকালীন সময়ে অনেক বেসামরিক মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিলেও নানাভাবে সহযোগিতা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *