ফারুক আহমেদ
না, ঠিক চিরাচরিত পুজোর গান নয়। এই গান অনুভবের গান। এই গানের শীর্ষক ‘স্পর্শ’, যা রিলিজ হওয়ার মাত্র আট ঘণ্টার মধ্যেই স্পর্শ করেছে তিন হাজারের বেশি ভিউয়ারকে। কমেন্টে ভরে গিয়েছে ইউটিউবের বাক্স, যখন এই প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে।
দুর্গা পুজোর মিলনমেলার আবহে আশা অডিওর নিবেদন এই পুজোর গান, এবার আশা অডিওর প্রাপ্ত লিঙ্কের সঙ্গে পুজোর কটা দিন বাজবে চালতাবাগান সর্বজনীন পুজো মণ্ডপে তাদের থিম সঙ হিসেবে। ১৯৪৩ সাল থেকে চলে আসছে এই ঐতিহ্যশালী দুর্গাপুজো। এবার ৮১ তম বর্ষ।
সুদক্ষ সমাজবন্ধু আইএএস অফিসার বিবেকুমার এবং বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক সুব্রতা ঘোষ রায় এই দুইজন জুটির গান যেন এক স্বতন্ত্র ও মার্জিত বোধের পরিচয় দেয়। গতানুগতিক গানের তুলনায় এই গান কিছুটা বড়। যে গান শুনতে শুনতে হয়ত মনে হবে সেইসব বিষয়ভিত্তিক বা দীর্ঘ গানের কথা-যেমন ‘রানার’, ‘কোন এক গাঁয়ের বধূ’, ‘অবাক পৃথিবীও, ‘তোমাকে চাই’, ‘আমাদের জন্য’ ইত্যাদি……। চায়ের কাপের স্পর্শ থেকে মায়ের কোমল হাতের স্পর্শ, প্রেমিক প্রেমিকার স্পর্শ থেকে বয়ে চলা নদীর তীর স্পর্শ, দমকা ছাঁটে ভেজার স্পর্শ থেকে আলপনার স্পর্শ, ভিটেমাটির মাতৃসমা স্পর্শ থেকে অমানিশা কেটে গিয়ে মানবজমিনে শান্তিস্পর্শ…… কতরকম স্পর্শের কথা যে বলা আছে এই গানে……।
বছরখানেক আগে আশা অডিও ‘কণ্ঠ ও সুরে’ বিবেক কুমার এবং ‘কথা’য় সুব্রতা- এই জুটির গান “আমার কলকাতা” রিলিজ করেছিল । সেই গানও ছিল ফুরফুরে বাতাসের মতো। এই গানের ভিউয়ারশিপ ছিল যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। শুধু ইউ টিউবেই এ পর্যন্ত ১,২৩,০০০ বার ডাউনলোড হয়েছে। খুব কম গানেই এই রেকর্ড আছে। বহু মানুষের হৃদয়কে ছুঁয়ে গিয়েছিল এই গান।
আশা অডিও কোম্পানী এবারও এই গান নিয়েও যথষ্ট আশাবাদী। দ্রোণ আচার্যর অনবদ্য সঙ্গীতায়োজনে অনন্য প্রাণময়তা ও স্বচ্ছন্দ গতি পেয়েছে এই গান। মিল্টন দস্তগীরের চলমান চিত্রাবলীতে অত্যন্ত মুনশিয়ানায় তৈরী হয়েছে এই গানের দৃশ্যরূপ। এই গান শুনে একবারের জন্য মনে হচ্ছে না যে বিবেককুমার মানুষটি অবাঙালি। বাংলা গান ও সুরের প্রতি নিবেদিত এক আন্তরিক আবেদন ধরা পড়েছে গানের প্রতিটি ছত্রে তাঁর নির্ভুল উচ্চারণে। গানের সমস্ত খুঁটিনাটি ও সার্বিক গঠনও পরিচালিত হয়েছে বিবেককুমারের সযত্ন পরিচালনায় এবং গভীর ও বন্ধুত্বপূর্ণ নজরদারিতে। এই গানে বিষয় চলতে চলতে কখন যে দুর্গাপুজোর আবহে প্রবেশ করে হয়ে উঠছে এক মঙ্গল-কামনার গান, – তা দর্শক ও শ্রোতা অনুভব করবেন গানটির শেষে এসে। চমক ভাঙবে যে এতক্ষণ তাঁরা একটি গান শুনছিলেন…! নদীর বয়ে চলার সুরে ও চমকে গভীর কথাপ্রধান এমন গান, সঙ্গে এমন অসাধারণ সুরেলা আবহ সাম্প্রতিক কালে খুব কমই তৈরি হয়েছে। অন্তরে, অনুভবে, স্পর্শে, চেতনায়, মঙ্গল কামনায় পুজোয় ও আগামীদিনে সঙ্গী হয়ে উঠুক এই গান, হৃদয় পরিপূর্ণ হোক এই গানে।
দুর্গোৎসব সার্থক হোক, সুন্দর হোক……এই গানের ‘স্পর্শে’।