শফিউল আলম শফি,কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফান আলীর বিরুদ্ধে উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির ৯০জন সদস্য ১১টি সুনিদিষ্ট দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ করেছেন। মিল মালিক সমিতির সদস্যরা তাদের অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করে তাকে প্রত্যাহার করা না হলে যে কোন সময় অনাকাঙ্খিত দুঃঘটনা ঘটতে পারে বলে হুসিয়ার করেছেন। মিল মালিক সমিতির সদস্যরা আফান আলীর বিরুদ্ধে যে ১১দফা অভিযোগগুলো করেছেন তা হলো ১.ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফান আলী চরম বদমেজাজী ও হীনমন্যতার মানুষ।২.গত বোর মওসুমে কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয় দেখায়ে নিজের লোক দিয়ে ক্রয় করেন এবং ভুয়া ছাটাই দেখায়ে ছাটাই বিল আতœসাৎ করেন ও বাজার থেকে নিম্নমানের চাল কিনে গুদামজাত করেন যা এখন গুদামে আছে। ৩.গত মওসুমে যে মিল মালিকরা তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে ৩১টি মিল মালিককে এবারে কোন বরাদ্ধ দেয়া হয়নি। ৪.ক্ষমতার অপব্যবহার করে পাক্ষিক ছাটাই করার মত ক্ষমতা ও অবকাঠামো থাকা শর্তেও বরাদ্ধ দেয়া হয়নি। ৫.২০১৬সালে বোর সংগ্রহ মওসুমে মিল মালিকদের কাছ থেকে বস্তা প্রতি ২৫টাকা করে নেন এবং অনেক মিল মালিককে জামানত ফেরৎ দেননি। ৬.ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার নিজের পছন্দের মিলের নামে বরাদ্ধ দেখায়ে পুরাতন চাল সংগ্রহ করেন। যা আজও গুদামে আছে।৭.ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিল মালিকদের নিকট ধান না নিয়ে নিজস্ব আতিœয় স্বজনদের নিকট থেকে নিম্নমানের ধান নেন।৮.চলতি আমন মওসুমে বস্তা প্রতি ৬০টাকা করে নেন। ৯.মিলাররা গুনগত মান সম্পন্ন চাল নিয়ে গুদামে আসলেও টাকা ছাড়া চাল গুদামে নেন না। ১০.মিলারদের বাধ্য করে টাকা ধার নেন এবং সে টাকা আর ফেরৎ দেন না। ১১.তার ব্যক্তিগত আচরনের ফলে কৃষকরা ৩-৪ বার তার গায়ে হাত তোলেন। এতে খাদ্য বিভাগসহ মিল মালিকদের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, নাগেশ্বরী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অসৎআচরনের বিরুদ্ধে ইতিপুর্বে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন ‘খাদ্য মন্ত্রী, আরসি ফুড ও ডিসি ফুড আমার পকেটে হাজারটা নিউজ ছাপলে ও তার বিরুদ্ধে দরখাস্ত করে কিছুই করতে পারবে না’। চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, দুর্নীতিবাজ গুদাম কর্মকর্তা আফান আলীর জ্বালায় মিলার ও খাদ্যশষ্য ডিলাররা অতিষ্ট। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, গুদাম কর্মকর্তা ভিজিডি ও ভিজিএফ কর্মসুচিতে গুদাম থেকে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করেন। তাও বস্তায় ৪-৫কেজি করে কম দেন। এছাড়া তিনি নিজের টাকায় পছন্দের লোকের মাধ্যমে ধান কিনে আদ্রতা যুক্ত নি¤œমানের চিটা, ধুলি-ময়লা মিশ্রিত ধান গভীর রাতে গুদামজাত করেন। মিল মালিকরা বলেন,ধুরন্ধর আফান আলী ধান গুদামে না দিয়ে ৪০মেঃটন ধানের বিল করে নেন। পরে ধানের পরিবর্তে বাইরে থেকে নিম্নমানের চাউল কিনে গুদামে সমন্বয় করেন। যোগাযোগ করা হলে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফান আলী তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বিাকর করে বলেন, একটি চক্র আমাকে সরাতে আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এদিকে উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল ওহাব ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আফান আলীর সীমাহীন দুর্নীতি ও অসদাচরনে অতিষ্ট হয়ে তার বরখাস্ত বা বদলী চেয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী,খাদ্য মন্ত্রী ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিস্ট উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের কপি কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের মাঝে বিতরন করা হয়েছে।