ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম-১ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার আওয়ামীলীগ। এই নির্বাচনে একটি অংশ প্রচারণা চালাচ্ছে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে। অপর অংশটি প্রচারণা চালাচ্ছে জাকের পার্টির পক্ষে। আওয়ামীলীগ দুই গ্রুপে বিভক্ত হওয়ায় এতে করে দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের তীব্রতার মাঝেও ভোটের মাঠ ক্রমেই গরম হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ প্রচারণা চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান এর লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে। অপরদিকে আওয়ামীলীগের বর্তমান এমপি আছলাম হোসেনের নেতৃত্বে অপর একটি অংশ জাকের পাটির্র মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হাই মাস্টারের পক্ষে মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন।এতে আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতাকর্মীরা পড়েছে বেকায়দায়।দলের এমন কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়ে পড়েছে তারা।
এই আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেয়েছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগর। কিন্তুু আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দিতে আছলাম হোসেনকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছে। ফলে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান (লাঙ্গল ) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে অনেকটাই নিশ্চিত ছিলেন। ভেবেছিলেন সহজেই বিজয়ী হবেন তিনি।কিন্তুু জাকের পাটির্র প্রার্থী আব্দুল হাই মাষ্টার গোলাপ ফুল প্রতীকের পক্ষে বর্তমান সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভোটের মাঠ গরম করে চলছেন।বর্তমান সাংসদ গোলাপ ফুলের পক্ষ নেয়ায় লাঙ্গলের বিজয়কে কঠিন করে তুলেছেন।
দীর্ঘদিন থেকেই বর্তমান সাংসদ আছলাম হোসেনের সাথে মত বিরোধ চলে আসছে দুই উপজেলার আওয়ামীলীগের মধ্য। বিরোধটি শুরু হয়েছে গত নাগেশ্বরী পৌরসভা নির্বাচন থেকে।সেসময় পৌর নির্বাচনে তার ভাই আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেলে আওয়ামীলীগের অন্য প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন ফাকু স্বতন্ত্র নির্বাচন করে তার ভাইকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দেয়।তখন থেকেই নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমান এমপির কিছু কর্মকান্ডে ভূরুঙ্গামারী উপজেলাতেও আওয়ামীলীগের দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃনমূল পর্যায়ের কিছু আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বলেন দলের এই গ্রুপিংএ ক্ষতিগ্রস্হ হচ্ছে আমাদের দল।ভোটের আছে আর কয়দিন বাকী এই অবস্হায় আমরা কি করব কোন দিকে যাব?
এ বিষয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান বলেন,এখানে কোন বিভক্তি নেই। আমাদের দুই উপজেলার আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন মিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক জাতীয় পাট পার্টির পক্ষে কাজ করছি। বর্তমান এমপি আছলাম সাহেব একাই জাকের পার্টির পক্ষে কাজ করছেন। দলের অন্য কেউ তার সাথে নেই।
এবিষয়ে কুড়িগ্রাম-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আছলাম হোসেন সওদাগর বলেন, যেহেতু আমি দল ও দেশের স্বার্থে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। আর আমাদের ১৪ দলের অন্তর্ভুক্ত জাকের পার্টি। তাই আমি জাকের পার্টিকে সমর্থন করেছি। উল্লেখ্য, কুড়িগ্রাম-১ আসনে বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।