হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামে “মার্চ ফর ফেলানী” কর্মসুচতে যোগ দিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয় সারজিস আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুধু প্রতিবেশী রাষ্ট্র নয়, পৃথিবীর প্রত্যেকটি রাষ্ট্রকে বলতে চাই আজকের পর থেকে কেউ যদি আমাদের কোন নাগরিকের দিকে শকুনের দৃষ্টিতে তাকার চেষ্টা করে তবে সেই দৃষ্টি উপরে ফেলার জন্য বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা যথেষ্ট।’তিনি আরো বলেন, আর যদি আমার কোন ভাই কিংবা আমাদের কোন বোনকে ওই সীমান্তে ওই তারকাটায় তাদের লাশ ঝুলে থাকে তবে আজকের এই মার্চ ফর ফেলানী ওই তারকাটাকে উদ্দেশ্য করে মার্চ হবে। আর যদি আমাদের পরবর্তী মার্চ তারকাটার উদ্দেশ্যে হয়, তবে আমাদের ওই লক্ষ্য তারকাটাকে ভেদ করে যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর যাবে।’

তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করে পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশকে একটি কথাই বলতে চাই, এই যে সীমান্ত হত্যা, তাঁরকাটা দেয়ার নামে জোড় করে বাঁধা দেয়ার জন্য যে প্রয়াস তা রুখে দেয়ার জন্য নতুন করে যে অভ্যুথান হয়েছে এই অভ্যুথানের স্পুলিং সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, কুড়িগ্রামে মার্চ ফর ফেলানী থেকে বলতে চাই আমরা বাংলাদেশের সীমান্তে কোন লাশ দেখতে চাই না। বাংলাদেশের যত নাগরিককে সীমান্তে লাশ করা হয়েছে তার বিচার আর্ন্তজাতিক আদালতে করতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্রজনতা আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে সেই ছাত্র জনতা নতজানু পররাষ্ট্র নীতি মেনে নিবে না। আগামীতে বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা যদি ক্ষমতা আকড়ে ধরার জন্য কোন দেশের দালাল হন তাহলে তাদের পরিণতি খুনি হাসিনার মতো হবে।

লং মার্চের শুরুতে ফেলানী হত্যাসহ সীমান্তে সকল নাগরিক হত্যার বিচার, সীমান্তে মরণঘাতী অস্ত্র বন্ধ, শহীদ ফেলানীর নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ ও কুড়িগ্রামের চরের জীবনজীবিকা উন্নয়নে নদী সংস্কারের ৫ দফা দাবি জানান সারজিস আলম।

লং মার্চটি সকাল সাড়ে ১০ টায় কুড়িগ্রামের জেলা শহরের কলেজ মোড় থেকে শুরু হয়। লং মার্চ শেষ হবে কুড়িগ্রামের নাগশ্বরী উপজেলা রামখানা ইউনিযনের নাখারগন্জ গ্রামে ফেলানীর বাড়িতে।

লং মার্চে আরও উপস্থিত রয়েছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহবায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, নির্বাহী সদস্য রিফাত রশিদ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের, নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসান, সমন্বয়ক রকিব মাসুদসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়াও লং মার্চে ফেলানীর বাবা নুর ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

মুখ্য সংগঠক সার্জিস আলমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কুড়িগ্রাম কলেজ মোড়স্থ স্বাধীনতার বিজয়স্তম্ভ থেকে লংমার্চটি শুরু করে নাগেশ্বরীতে প্রায় ২৮কিলোমিটার দূরে ফেলানীর বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে কুড়িগ্রাম থেকে পাটেশ্বরী বাজার, মধ্যকুমরপুর বাজার, নাগেশ্বরী উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে “জুলাই বিপ্লবের” ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে সাধারণ জনগণের মতামত জানতে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

দূপুরে লং মার্চ শেষে নাগেশ্বরীর নাখারগন্জ বাজারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন